সুকান্তর বাইক মিছিলে বাধা, বিজেপি’র ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন ঘিরে সরগরম ভবানীপুর

কলকাতা: ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘিরে ফের উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার দুপুরে কলকাতায় বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে ধস্তাধস্তি, বাধা, এমনকি একাধিক বিতর্কিত ঘটনার ছবি সামনে এসেছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের…

BJP Kolkata protest police blocking

কলকাতা: ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘিরে ফের উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার দুপুরে কলকাতায় বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে ধস্তাধস্তি, বাধা, এমনকি একাধিক বিতর্কিত ঘটনার ছবি সামনে এসেছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মাল্যদানের পর বিজেপির পরিকল্পনা ছিল বাইক মিছিল করে নেতাজি ভবনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার। সেই পথেই বাধা দেওয়া হয় রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে, অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। ২০ জুন দিনটি কেন্দ্রীয়ভাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্তে বিজেপি রাজ্য স্তরে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়। তারই অংশ হিসেবে দক্ষিণ কলকাতায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মাল্যদান করেন বিজেপি নেতারা। এরপর সেখান থেকে বাইক মিছিল করে নেতাজি ভবনে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

   

পুলিশি বাধা BJP Kolkata protest police blocking

তবে সেই পরিকল্পনা রূপায়ণে পুলিশি বাধার অভিযোগ তুলে সরব হয় বিজেপি। মহিলা পুলিশকর্মীরা বাইকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে সুকান্ত মজুমদারের পথ রোধ করেন এমন দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। যদিও তিনি শেষপর্যন্ত একা বাইকে চড়ে এগোনোর চেষ্টা করেন, সঙ্গে ছিলেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরাও।

বিজেপির কর্মীদের অভিযোগ, “একজন সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, রাজ্য সভাপতি, তাঁর গাড়ি আটকানো হচ্ছে! নেতাজির বাড়িতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। গণতান্ত্রিক দেশে এ কেমন আচরণ?” বিজেপি সূত্রের দাবি, পুলিশের এই আচরণ একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এবং রাজ্য সরকারের ইঙ্গিতেই করা হয়েছে।

বিরোধিতা তৃণমূলের

প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রীয় ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ উদযাপনের বিরোধিতা করে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ঘোষণা করেছেন, “১লা বৈশাখ ছাড়া অন্য কোনও দিন পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে মান্যতা পাবে না।”

এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির কর্মসূচিকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার বলেই ব্যাখ্যা করেছে তৃণমূল। তবে বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে ২০ জুন এক গুরুত্বপূর্ণ দিন, কারণ এ দিনেই বাংলার বিভাজনের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছিল।

Advertisements

বজবজে জনবিক্ষোভের মুখে সুকান্ত

এখানেই থামেনি বিতর্ক। বৃহস্পতিবার বজবজে গিয়ে জনবিক্ষোভের মুখে পড়েন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দিকে জুতো ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে, যা ঘিরেও উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনার পরই তিনি লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চিঠিতে তিনি লেখেন,
“একজন সাংসদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কীভাবে সহ্য করা যায়? এর প্রতিক্রিয়া শুধু রাজনৈতিক নয়, সাংবিধানিক প্রশ্নও তুলে দেয়।”

বর্তমানে বিজেপি দাবি করছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সম্মান রক্ষায় দিল্লি হস্তক্ষেপ করুক। অন্যদিকে, তৃণমূল বলছে, বিজেপি অহেতুক ইস্যু তৈরি করছে।

সব মিলিয়ে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ ঘিরে ক্রমেই রাজনৈতিক পারদ চড়ছে, এবং সামনে আরও সংঘাত তীব্রতর হতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা।