সমবায় ভোটে ধরাশায়ী বিজেপি, ৯টির মধ্যে ৯টিতেই জয়ী তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক সমীকরণে ফের একবার বড় ধাক্কা খেল ভারতীয় জনতা পার্টি। খেজুরি ১ ব্লকের কৃষ্ণনগর পশ্চিম পাড়া কৃষি উন্নয়ন সমবায়…

সমবায় ভোটে ধরাশায়ী বিজেপি, ৯টির মধ্যে ৯টিতেই জয়ী তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা

মিলন পণ্ডা, খেজুরি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক সমীকরণে ফের একবার বড় ধাক্কা খেল ভারতীয় জনতা পার্টি। খেজুরি ১ ব্লকের কৃষ্ণনগর পশ্চিম পাড়া কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির নির্বাচনে (Khejuri Co-operative Polls) ৯টি আসনের সবকটিতেই জয়লাভ করল তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থীরা। বিজেপি একটি আসনেও জয় পায়নি। এই জয়ের পর একদিকে তৃণমূল নেতৃত্বের উল্লাস, অন্যদিকে ভোট লুটের অভিযোগ তুলে রাজ্য শাসক দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগল বিজেপি।

জানা গিয়েছে, খেজুরি ১ নম্বর ব্লকের এই সমবায় সমিতি নির্বাচনে মোট ৯টি আসনের জন্য প্রার্থী ছিলেন তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা। সমবায় ভোটকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই চূড়ান্ত উত্তেজনার আবহ ছিল এলাকাজুড়ে। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা বজায় রাখতে মোতায়েন করা হয়েছিল খেজুরি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।

   

ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলেও বিকেল গড়াতেই ফলাফল প্রকাশ হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দেখা যায়, তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা ৯টি আসনের সবকটিতেই জয়লাভ করেছেন। এরপরই শুরু হয় বিজয় উল্লাস। সবুজ আবির উড়িয়ে মিছিল করে খেজুরির বিভিন্ন এলাকায় আনন্দে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মী, সমর্থক ও নেতৃত্বরা।

এই জয়কে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের রায় হিসেবে ব্যাখ্যা করেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি এবং খেজুরি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন খান। তিনি বলেন,
“বিজেপির মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষ রায় দিয়েছেন। সমস্ত আসনে আমাদের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। আগামী দিনে বিধানসভা ও লোকসভাতেও এই জয়ই পুনরাবৃত্ত হবে।”

তবে এই জয়কে স্বাভাবিক বলে মানতে নারাজ বিজেপি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সহ-সভাপতি তাপস দলাই বলেন, “এই ভোটে শাসক দল চূড়ান্তভাবে কারচুপি করেছে। ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। খেজুরি আসনে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিপুল লিড পেয়েছিল। আজ ভোট লুট করে সেই লিড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল।”

Advertisements

তৃণমূলের একের পর এক নির্বাচনে সাফল্য পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপির ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এই সমবায় নির্বাচনের ফল তৃণমূলের কাছে যে বড় মনোবল বাড়ানোর বার্তা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

স্থানীয় সূত্রের খবর, খেজুরির কৃষক সমাজ ও গ্রামীণ ভোটারদের একাংশ তৃণমূল সরকারের কৃষি প্রকল্প এবং কৃষকদের জন্য বিভিন্ন সহায়তার কারণে আবারও শাসক দলের প্রতি আস্থা রেখেছে। অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ তুলে ধরে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, “ভোটের হারানো জমি ফিরে পেতে বিজেপিকে নীচুস্তরের সাংগঠনিক ক্ষমতা আরও শক্ত করতে হবে।”

সামগ্রিকভাবে, সমবায় নির্বাচনের ফলাফল পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক চিত্রে নতুন মোড় এনে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। এখন দেখার, এই সাফল্য তৃণমূল কংগ্রেস কতটা কাজে লাগাতে পারে সামনের বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে।