বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচনে কারচুপি! সতর্ক করলেন সুনীল বনশল

বঙ্গ বিজেপির (BJP Bengal) সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে অনিয়ম এবং স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অভ্যন্তরে।…

BJP Bengal Organizational Elections Under Scrutiny: Sunil Bansal Warns Against Manipulation

short-samachar

বঙ্গ বিজেপির (BJP Bengal) সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে অনিয়ম এবং স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অভ্যন্তরে। এই প্রেক্ষিতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় সংগঠন সম্পাদক সুনীল বনশল একটি বৈঠকে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন।

   

তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “বুথ সভাপতির নির্বাচনে জল মেশাবেন না। অতীতে এই রাজ্যে এমন অনেক উদাহরণ আছে যেখানে কারচুপি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনা সংগঠনের ভিত্তিকে দুর্বল করে এবং ভবিষ্যতে দলীয় কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।”

বুথ কমিটির গঠন এবং সময়সীমা
বুথ কমিটির গঠন নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন সুনীল বনশল। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ২৫ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত বুথ কমিটি গঠন শেষ করতে হবে। বর্তমানে রাজ্যে বিজেপি প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বুথ কমিটি গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। তবে, এটি আদর্শ লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটাই দূরে।

বুথ কমিটি গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কারণ এটি মূলত দলের শিকড় মজবুত করে। কিন্তু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় বুথ কমিটি গঠনের বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্ব বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরামর্শ অনুযায়ী, সেখানে সংগঠন গঠনের প্রয়োজনীয়তা এখন খুব বেশি অনুভব করা হচ্ছে না।

মণ্ডল ও জেলা কমিটির গঠন
বুথ কমিটি গঠনের পরের ধাপে রয়েছে মণ্ডল কমিটি এবং জেলা সভাপতির নির্বাচন। নির্দেশ অনুযায়ী, ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মণ্ডল কমিটি গঠন করতে হবে। ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জেলা সভাপতি নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

এই সময়সীমাগুলি নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতৃত্বকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। দলীয় কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য সময়মতো এবং সঠিকভাবে সংগঠনের প্রতিটি স্তর গঠনের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

সংখ্যালঘু এলাকায় বিজেপির অবস্থান
বিজেপির নেতৃত্ব সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংগঠন গঠনের ক্ষেত্রে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, এই অঞ্চলে বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। এ ধরনের এলাকায় বুথ কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা। ফলে এই অঞ্চলগুলিতে সাংগঠনিক প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে শিথিল রাখা হয়েছে।

কারচুপির অভিযোগ এবং সতর্কবার্তা
সুনীল বনশল অতীতের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই রাজ্যে অতীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংগঠনের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এটি দলের ভাবমূর্তি এবং কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, সঠিক তথ্য প্রদান এবং নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। এতে দলের আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং সংগঠন লাভবান হবে।

চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বঙ্গ বিজেপির জন্য সংগঠন গঠন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তিশালী ভিত্তির মোকাবিলা করতে হলে বিজেপিকে শিকড় স্তর থেকে দলীয় কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। তবে, কারচুপির অভিযোগ এবং সংখ্যালঘু এলাকায় উদাসীনতা দলের কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট। সুনীল বনশল-এর সতর্কবার্তা দলের শৃঙ্খলা এবং স্বচ্ছতা রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, সময়সীমা মেনে এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সম্পন্ন করতে না পারলে সংগঠনের ভিত্তি দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই ক্ষেত্রে নেতৃত্বের সুপরিকল্পিত এবং দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করাই হবে সঠিক পথ।