বর্তমানে বহু চর্চিত বিষয়গুলির মধ্যে একটি বীরভূমের(Birbhum) বগটুই গ্রামের নৃশংস হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। সকাল থেকেই রামপুরহাটের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল স্থানীয় গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভে উপস্থিত রয়েছেন লালন শেখের পরিবারের সদস্যরা। একইসঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হয়েছে বগটুই গণহত্যায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের পরিবার।
গত ২১ মার্চ বীরভূমের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের মৃত্যুর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বগটুই গ্রাম। একাধিক বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় মৃত্যু হয় ১০ জনের। সেই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখ দীর্ঘ সময় ধরে ফেরার ছিল। চলতি মাসেই তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁকে ৬ দিনের হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশও দেয় রামপুরহাট আদালত।
সূত্রে খবর, লালনের যেখান থেকে মৃতদেহ পাওয়া গেছে, তা দেখে চমকে যাওয়ার মতো। সিবিআই ক্যাম্পের শৌচাগারে একটি কলের পাইপ থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে লালনের দেহ। পা ঠেকে রয়েছে মাটিতে। পরনে একটা কালো অন্তর্বাস। সারা গায়ে আর কিচ্ছু নেই। কিছুদিন আগেই গ্রেফতার হওয়া লালনকে ৬ দিনের হেফাজতে নিয়েছিল সিবিআই। তারপরে এই ঘটনা কেন ঘটল? এই নিয়ে বাড়ছে চাপানউতোর।
গতকাল বিকেলেই লালনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের তরফে দাবি করা হচ্ছে, সিবিআই লালনের ওপর বেধড়ক মারধর করেছিল৷ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না। এমনকি জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ তুলেছে মৃত লালনের পরিবারের লোকজন। সিবিআই হেফাজতের নেওয়ার পরই লালনের এইরূপ অবস্থার জন্য সিবিআই দোষী সাব্যস্ত করেছে পরিবারের লোকজন। লালনের মৃত্যুর দায়ে সিবিআইয়ের শাস্তির দাবি জানানো হচ্ছে। সিবিআই অফিসারদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
এদিন সকাল বেলাতেই ব্যারিকেড ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করে গ্রামবাসীরা। সেইসময় রাজ্য পুলিশের আধিকারিকরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ঘটনাস্থলে বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও।
ইতিমধ্যেই লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে রয়েছে মামলার শুনানি। সিবিআই হেফাজতে থাকার পরেও কীভাবে লালন শেখের মৃত্যু হল? তা নিয়ে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শুনানি শুরু হবে।