গণহত্যার তদন্তে উঠে এসেছে বীরভূমের (Birbhum) বগটু়ই (Bogtui massacre) গ্রামে তৃ়ণমূল কংগ্রেসের (TMC) গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব হয়েছিল পাথর ও কয়লা পাচারের বখরা বাঁটোয়ারা থেকেই। তার জেরে ভাদু শেখ খুনের ঘটনা ও তার পরই কুপিয়ে পুড়িয়ে খুন করা হয় কমপক্ষে ১১ জনকে। বেসরকারি হিসেবে ১২ জন নিহত হন। ভয়াবহ সেই গণহত্যার গ্রাম বগটুইতে কি রাজনৈতিক ছবি পাল্টাচ্ছে? বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে সিপিআইএমের (CPIM) বিশাল মিছিলেন পর থেকে বীরভূম ছাড়িয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে একই প্রশ্ন উঠে গেল।
- অনুব্রতহীন বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে রাজনৈতিক হাওয়ায় ফের উড়ছে CPIM পতাকা
- গোরু পাচার মামলায় অনুব্রত জেলে বন্দি
- তাকে বীর বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
- অনুব্রতকে বীরভূমের বাঘ বলে কর্মীদের চাঙ্গা করতে মরিয়া মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
সিপিআইএম বীরভূম জেলা কমিটির দাবি, মিছিল ঢুকতেই উচ্ছ্বাসে ভেসে যায় অবরুদ্ধ বগটুই গ্রাম। গত ২১ মার্চে এই গ্রামে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল তার পর থেকে এলাকাছাড়া বহুজন অন্যত্র ছিলেন। তদন্তের কারণে সিবিআই এলেও এলাকা একপ্রকার অবরুদ্ধ। সেখানেই বিশাল মিছিল দেখে ঘর থেকে প্রায় সবাই বের হয়ে আসেন।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূম জুড়ে একের পর এক গ্রামে তৃ়ণমূল কংগ্রেসের ভাঙন ধরেছে তা স্বীকার করছেন দলের নেতারা। গোরু পাচার তদন্তে জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আসানসোলের জেলে বন্দি। বীরভূমের তৃণমূল নেতারা কেষ্টদা’র দাপুটে ইমেজের অভাব বোধ করছেন বলেই বারবার জানাচ্ছেন।
কোটি কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন ও বিপুল সম্পত্তির পাশাপাশি লটারিতে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগে আরও বেফাঁসে অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর কন্যা সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। দিল্লিতে এই জিঞাসাবাদে শিক্ষিকা সুকন্যা বিপুল আর্থিক লেনদেন নিয়ে বলেন ‘সব বাবা জানেন’। জানা যাচ্ছে সুকন্যার বয়ানকে হাতিয়ার করে ইডি অতি দ্রুত অনুব্রতকে দিল্লিতে জেরা করতে মরিয়া। রাজ্য পুলিশের কর্মী হিসেবে সায়গল হোসেন ছিল অনুব্রতর দেহরক্ষী। তার ঠাঁই হয়েছে তিহার জেলে।
এদিকে অনুব্রতহীন বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে রাজনৈতিক হাওয়ায় ফের উড়ছে সিপিআইএমের পতাকা। গত ২০১১ সালের পর থেকে পূর্বতন বাম জমানার লাল ঘাঁটি বীরভূম বামশূন্য হয়েছিল। সর্বশেষ বিধানসভা ভোটে জেলার একমাত্র নানুর আসনটি সিপিআরএম হারায়। তবে পুরভোটে একটি বোর্ড না পেলেও বাম শিবির গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বীরভূমে উঠে এসেছে মূল বিরোধী শক্তি হিসেবে। বিজেপি হয়েছে শূন্য।
বীরভূম জেলা বিজেপির দাবি, তাদের সমর্থকরাও ভাঙছেন। তারা চলে যাচ্ছেন বাম শিবিরে।
জেলা সিপিআইএম জানিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোট সামনে রেখে বীরভূম সহ গোটা রাজ্যেই চলছে গ্রাম ভিত্তিক জাঠা। এই সব মিছিলের ভিড়ে শাসকদল তৃ়ণমূল ভীত। ‘লুঠেরাদের হাত থেকে মুক্ত করে মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তোলো।’ ‘তৃণমূলের দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করো।’ ‘পঞ্চায়েতে লুঠ বন্ধ করো’ এমন স্লোগান সামনে রেখে বীরভূম জুড়ে চলছে প্রচার। অনুব্রত মণ্ডল জেলে থাকায় জেলাবাসী নিশ্চিন্ত।