মানিকচকের ভূতনি দ্বীপের রিং বাঁধ ভেঙে বিপত্তি! কাটমানি অভিযোগ শুভেন্দুর

মালদার মানিকচক ব্লকের ভূতনি দ্বীপে ফুলহার নদীর তীব্র স্রোতে রিং (Shuvendu)বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রায় ১.৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বাঁধ…

irresponsible Remark, an Insult to National Pride: Suvendu Slams Mamata"

মালদার মানিকচক ব্লকের ভূতনি দ্বীপে ফুলহার নদীর তীব্র স্রোতে রিং (Shuvendu)বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রায় ১.৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বাঁধ মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ধসে পড়েছে, যা সরকারি অর্থের অপচয় এবং নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগকে উস্কে দিয়েছে।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে কাটমানির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সরকারি টাকার নয়ছয়ের ফলে এমন দুর্বল বাঁধ নির্মাণ হয়েছে, যা এই বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।বুধবার সকালে ফুলহার নদীর প্রবল জলের তোড়ে দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রিং বাঁধের একটি বড় অংশ ভেঙে যায়।

   

ফলে হু হু করে জল ঢুকে পড়ে ভূতনি দ্বীপের আশপাশের এলাকায়, যার ফলে উত্তর চণ্ডীপুর, দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দা প্লাবনের আতঙ্কে রয়েছেন। গঙ্গা এবং ফুলহার নদীর মাঝে অবস্থিত ভূতনি দ্বীপ বরাবরই বন্যার কবলে পড়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঘটনায় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ এবং ভয়ের সঞ্চার হয়েছে।

এই সঙ্কট মোকাবিলায় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বিবৃতিতে মুখ্যসচিবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকার পরিবর্তে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মনোনিবেশ করেন। তিনি জরুরি ভিত্তিতে সরকারি ত্রাণ শিবির স্থাপন, আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার, শুকনো খাবার ও ওষুধ সরবরাহ এবং গবাদি পশুদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।

এছাড়াও, তিনি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-কে তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নিয়োজিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।শুভেন্দু আরও বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে সরকারি ক্যাম্পে স্থানান্তর করতে হবে।

ক্যাম্পগুলিতে রান্নার ব্যবস্থা, শুকনো খাবার, ওষুধ এবং গবাদি পশুদের খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।” তিনি মাননীয় রাজ্যপালকে এই এলাকা পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি হয় এবং তারা দ্রুত মানুষের সেবা ও সুরক্ষায় নিয়োজিত হয়।এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তারা অভিযোগ করেছেন যে বাঁধ নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে এটি এত তাড়াতাড়ি ভেঙে গেছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এত টাকা খরচ করে বাঁধ তৈরি করা হল, কিন্তু কয়েক মাসও টিকল না। এটা স্পষ্টতই দুর্নীতির ফল। আমাদের জীবন এখন বিপদে।”

Advertisements

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৫টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে ৮,০০০ মানুষের জন্য রান্না করা খাবার এবং ২৫,০০০ মানুষের জন্য শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

এছাড়াও, ৩০,০০০ ত্রিপল বিতরণ করা হয়েছে এবং ৩৬টি স্বাস্থ্য শিবির ও ২৫টি পশু চিকিৎসা শিবির পরিচালিত হচ্ছে। তবে, স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে ত্রাণ বিতরণে অব্যবস্থা এবং অপ্রতুলতা রয়েছে।

এই ঘটনা ভূতনি দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য একটি মারাত্মক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, এবং অনেকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি, যেমন শান্তিবর্তা ফাউন্ডেশন, ত্রাণ সামগ্রী ও ওষুধ বিতরণে সহায়তা করছে। তবে, বাসিন্দারা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে আরও কার্যকর পদক্ষেপ এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

নিজের পুরনো লিগেই ফিরবেন আদমা নিয়ানে?

এই বিপর্যয়ের পর বাঁধ পুনর্নির্মাণ এবং ভূতনি দ্বীপের সুরক্ষার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে। স্থানীয়রা এই ঘটনাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন, যাতে কেন্দ্রীয় সরকার এই সঙ্কট মোকাবিলায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News