পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে (West Bengal Government) নয়া তকমা দিল কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রক। বাংলা ‘হাই পারফর্মিং স্টেট’ অর্থাৎ উচ্চ কর্মক্ষমতা সম্পন্ন রাজ্যের তালিকায় জায়গা পেল। কিছুদিন আগে বাংলার বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।
অভিযোগ ছিল, ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, স্বাস্থ্য মিশন, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা, শিক্ষা মিশন সহ বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল, বাংলায় এই প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে অনিয়ম এবং দুর্নীতি হচ্ছে। একাধিকবার বঙ্গ-বিজেপি নেতারা তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন।
তবে এখন সেই অভিযোগের বিপরীত প্রমাণ তুলে ধরল কেন্দ্রীয় সরকারের নিজস্ব রিপোর্ট। কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রক একাধিক রাজ্যের পঞ্চায়েত কার্যক্রমের মূল্যায়ন করেছে। এর ভিত্তিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উচ্চ কর্মক্ষমতা সম্পন্ন রাজ্য হিসেবে পরিচিতি দেওয়া হয়েছে।
মূল্যায়ন অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal Government) ১০০ নম্বরের মধ্যে ৫৬.৫২ নম্বর পেয়েছে। এই মূল্যায়নে ছয়টি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে—পঞ্চায়েতগুলির সঠিক পরিচালনা, নিয়মিত অডিট, টাকা খরচে স্বচ্ছতা, পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা, এসসি, এসটি এবং নারীদের সংরক্ষণ সংক্রান্ত নিয়মগুলির পালন এবং আর্থিক বিষয়ের উপর মূল্যায়ন।
এছাড়াও, পঞ্চায়েতদের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করার জন্য কী কাজ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হয়। এসব বিষয়ের ভিত্তিতে বাংলাকে ‘হাই পারফর্মিং স্টেট’ তকমা দেওয়া হয়েছে, যা আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই রিপোর্ট প্রকাশের পর বিজেপি নেতারা এখনও এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে তাদের কাছে এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, মূল্যায়নের ভিত্তিতে পঞ্চায়েতের পরিকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং কর্মীসংখ্যা বিষয়ক বিভাগে বাংলার স্কোর ছিল ৬৭.৭৬। এই মূল্যায়ন দেশের সব রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে করা হয়েছে।
বাংলা রাজ্য প্রশিক্ষণ নেওয়া জনপ্রতিনিধি, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ব্যবস্থা এবং পরিকাঠামো বিভাগে ৭০.৬৩ নম্বর পেয়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছে। এই মূল্যায়ন বাংলার উন্নয়ন ও কার্যক্রমের সাফল্যকে আরো প্রমাণিত করেছে। তা সত্ত্বেও, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছিল, তা এখন মিথ্যা প্রমাণিত হল। বাংলার এই সফলতা কেন্দ্রীয় সরকারের অভিযোগের বিরুদ্ধে একটি বড় জবাব হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
এটি শুধু বাংলার জন্য নয় দেশের অন্য রাজ্যগুলির জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন পঞ্চায়েত কার্যক্রম এবং স্থানীয় প্রশাসন সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তখন উন্নয়ন দ্রুত ঘটে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই উন্নয়নের প্রভাব স্পষ্ট হয়। বাংলার এই সাফল্য দেশব্যাপী প্রচারের জন্য একটি ভালো দৃষ্টান্ত। এমনটাই মনে করছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা।