পশ্চিমবঙ্গের সবজি বাজারে মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর দামের কিছুটা অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে (Vegetable Market Price)। বর্ষার প্রভাব, সরবরাহে ঘাটতি, এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সবজির দামে ওঠানামা দেখা যাচ্ছে। কলকাতা এবং রাজ্যের অন্যান্য মান্ডি ও খুচরা বাজারে বিভিন্ন সবজির দামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন বাজেটের উপর প্রভাব ফেলছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, যা দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।মঙ্গলবারের বাজারদর অনুযায়ী, বড় পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩২ টাকা থেকে শুরু হয়ে খুচরায় ৩৮-৫৩ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ছোট পেঁয়াজের দাম আরও বেশি, প্রতি কেজি ৫৪ টাকা থেকে খুচরায় ৬৫-৮৯ টাকা। টমেটোর দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা থেকে খুচরায় ৪৮-৬৬ টাকা। সবুজ লঙ্কার দাম ৪৩ টাকা থেকে শুরু হয়ে খুচরা বাজারে ৫২-৭১ টাকা। বিটরুট প্রতি কেজি ৩০ টাকা, আলু ৩২ টাকা, কাঁচা কলা ৮ টাকা, আমলকি ৯৫ টাকা, কুমড়ো ২১ টাকা, বেবি কর্ন ৫৬ টাকা, এবং ক্যাপসিকাম ৪৬ টাকা প্রতি কেজি।
অন্যান্য সবজির মধ্যে ফুলকপি ২৮ টাকা, গাজর ৪২ টাকা, বাঁধাকপি ২৯ টাকা, ঝিঙে ৩২ টাকা, করলা ৩৭ টাকা, এবং বড়বটি ৪২ টাকা প্রতি কেজি। নারকেলের দাম ৬৮ টাকা থেকে খুচরায় ৮২-১১২ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে।এই দামের তালিকা কলকাতার শিয়ালদা কোলে মার্কেটের মতো পাইকারি মান্ডি এবং খুচরা বাজারের গড় মূল্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
রাজ্য সরকার এই দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। সুফল বাংলা, রাজ্যের নিজস্ব খুচরা বিক্রয় নেটওয়ার্ক, ন্যায্য মূল্যে সবজি সরবরাহের চেষ্টা করছে। সুফল বাংলার মাধ্যমে টমেটো এবং সবুজ লঙ্কার দাম যথাক্রমে ৪৮ টাকা এবং ৫২ টাকা প্রতি কেজি রাখা হয়েছে, যা খুচরা বাজারের তুলনায় কিছুটা কম। তবে, বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরবরাহ শৃঙ্খলা পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দামের উপর চাপ অব্যাহত থাকবে।
দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে, যেমন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সবজি পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করছে। উত্তরবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধসের আশঙ্কা থাকায় সবজি সরবরাহ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না, কারণ মধ্যস্বত্বভোগীরা বাজারে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। রবীন্দ্রনাথ কোলে, একজন সবজি বাজার বিশেষজ্ঞ, বলেন, “বর্ষার শেষে নতুন ফসল বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে, বর্তমানে পরিবহন খরচ এবং সরবরাহের ঘাটতি দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ।”
সাধারণ মানুষের জন্য এই দাম বৃদ্ধি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কলকাতার গৃহিণী সঙ্গীতা আগরওয়াল বলেন, “বাজারে গিয়ে দেখি সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আলু, পেঁয়াজ, টমেটোর মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে।” এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের কাছে বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠছে।
সুরুচি ম্যাচ দিয়ে সুপার সিক্স শুরু করছে ডায়মন্ড হারবার, আর কবে ম্যাচ?
আগামী দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমলে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলা স্বাভাবিক হলে সবজির দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে। তবে, বর্তমানে সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চলতে হচ্ছে। রাজ্য সরকার এবং কৃষি বিভাগকে কৃষক ও গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।