সবাইকে শুনব, তবে পৃথকভাবে মামলা করুন: চাকরিহারাদের বার্তা হাইকোর্টের

কলকাতা: চাকরি না পেয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে পুলিশি ‘অতিসক্রিয়তার’ অভিযোগে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন দুই আন্দোলনকারী শিক্ষক। অভিযোগ, বিকাশ ভবনের সামনে প্রতিবাদে…

Calcutta High Court

কলকাতা: চাকরি না পেয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে পুলিশি ‘অতিসক্রিয়তার’ অভিযোগে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন দুই আন্দোলনকারী শিক্ষক। অভিযোগ, বিকাশ ভবনের সামনে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার ‘অপরাধে’ একের পর এক নোটিস পাঠাচ্ছে পুলিশ, কখনও বাড়িতে, কখনও বা স্কুলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সামনেই দেওয়া হচ্ছে সেই নোটিস। এই আচরণকে শিক্ষকদের ভাষায় “সামাজিক অবক্ষয়ের উদাহরণ”।

 “অপরাধী নই, শুধু অধিকার চেয়েছিলাম” মামলাকারী শিক্ষকের দাবি

হাইকোর্টে এই মামলার আবেদন করেছেন দুই আন্দোলনকারী শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল ও সঙ্গীতা সাহা। তাঁদের বক্তব্য, “আমরা কোনও অন্যায় করিনি। শুধু আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু সেই কারণে এভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে।”

   

আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার আদালতে দাবি করেন, মামলা দায়ের হওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে ৮ থেকে ৯টি নোটিস পাঠানো হয়েছে তাঁদের কাছে। সেই সব নোটিস ও দায়ের হওয়া FIR বাতিল করার আর্জি জানান তিনি।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ Bengal Teachers Protest Harassment

এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “শুধু একজনের আবেদনে সকলের কথা শোনা সম্ভব নয়।” তাঁর মন্তব্য, “১০০ জন একসঙ্গে আবেদন করলে শুনব। কাউকে ফিরিয়ে দেব না। তবে যাঁরা হয়রানির অভিযোগ করছেন, প্রত্যেকেই আলাদা করে কিংবা সম্মিলিতভাবে মামলা দায়ের করুন। অন্যের মামলায় যুক্ত হওয়া চলবে না।”

বোর্ডের ভূমিকা নিয়েও আদালতের কড়া অবস্থান

আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বোর্ড থেকে শোকজ নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষকদের আইনজীবী। জবাবে বিচারপতির হুঁশিয়ারি, “আমার নির্দেশ অমান্য করে থাকলে, ব্যবস্থা নিতে আমি বাধ্য হব।” এমন মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, আদালত বোর্ডের ভূমিকাও খতিয়ে দেখবে।

Advertisements

পরবর্তী শুনানি আগস্টে, নজরে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা

এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী আগস্টে হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট। তবে শিক্ষকদের উদ্দেশে পুলিশের আচরণ এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ভূমিকা আদালতের কড়া নজরে রয়েছে বলেই মনে করছেন আইনি মহল।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি, “চাকরি পাইনি, প্রতিবাদ করেছি তাতে যদি অপরাধ হয়, তাহলে দেশের গণতন্ত্রের কী মানে থাকে?”