Bengal Politics: সুজাতা থেকে স্বস্তিকা: বঙ্গ রাজনীতির বউ-বিড়ম্বনা

Bengal Politics Sees Wife Trouble: ঘরের বউ। সংসার করবে। চাকরিও করতে পারে। ব্যবসা করলেও সমস্যা নেই। কিন্তু সে তো স্বামীর পাশে থাকবে। শুরু শুরুতে প্রেমালাপ…

Image depicting Sujata Mondal Khan and Swastika Bhuvaneswari, two individuals, standing together and smiling in front of a neutral background.

Bengal Politics Sees Wife Trouble: ঘরের বউ। সংসার করবে। চাকরিও করতে পারে। ব্যবসা করলেও সমস্যা নেই। কিন্তু সে তো স্বামীর পাশে থাকবে। শুরু শুরুতে প্রেমালাপ করবে। তারপর খিটখিট করবে। বাজার থেকে সংসার-সবেতেই স্বামীর ভুল ধরবে। সবেতেই বিরোধিতা করা মাস্ট। রাগ হলে বাপের বাড়িতে যাবে। তা না, বউ কিনা বিরোধী দলে যোগ দেবে? স্বামীর বিরুদ্ধে গিয়ে রাজনীতি করবে? এ আবার কেমন ধারা বউ রে বাপু! তোর রাজনীতি করার হলে কর, তাই বলে স্বামীর বিরুদ্ধে যাবি। কী অলুক্ষণে কাণ্ড!

এমই কাণ্ড বারবার ঘটছে বাংলায়। লোকসভা ভোটের ঠিক আগে বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল প্রার্থীর বউ। স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর স্ত্রী। বাংলার মাটিতে এমনটা নতুন নয়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের মুখে আচমকা ব্রেকিং নিউজ। তৃণমূল যোগ দিচ্ছেন সুজাতা মণ্ডল। বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের বউ। নিউজ চ্যানেলই স্বামী-স্ত্রীর মান অভিমান। চোখের জল। ঠিক যেন সন্ধের সিরিয়াল।

   

বাংলা অবাক। বিজেপির দিল্লির নেতারাও আবাক। এই তো ২০১৯ সালে বিষ্ণুপুরে স্বামী সৌমিত্রর জন্য ঘুরে ঘুরে প্রচার করলেন সুজাতা। জিতিয়েও দিলেন। তারপর সৌমিত্র-সুজাতার নানা ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। কখনও সৈকতে সুজাতার ঘোরায় চেপে বিয়ারের বোতল হাতের ছবি। কখনও আবার দম্পতির ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি। স্ত্রী সুজাতার চুল আঁচড়ে দিচ্ছেন সৌমিত্র। এই ভিডিও ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল সোশাল মিডিয়া। সেই সুজাতারই ভোলবদল। একেবারে তৃণমূলে গিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে প্রার্থী।

২০১৭ সালের পর থেকে নানা অনেক নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যা তুঙ্গে ওঠে ২০২০ সালের শেষের দিকে। মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সৌমিত্র খাঁও তৃণমূল ছেড়েই বিজেপিতে যোগ দেন। সেই বাজারে সুজাতা মণ্ডলের দলবদল যেন তৃণমূলের মাস্টার স্ট্রোক। এটাই যেন কোমন ধারা!

এই ধারার সঙ্গে বাংলা পরিচিত নয়। ভাই-ভাই আলাদা পার্টি করতেই পারে। তাই বলে স্বামী-স্ত্রী আলাদ পার্টিতে! স্বামী-স্ত্রী রাজনীতি করতেই পারেন। কিন্তু আলাদা দল কেন করবেন? অনেক সিপিএম নেতার বউ তো মহিলা সমিতির নেতা ছিলেন। প্রয়াত সিপিআইএম সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীও তো অন্য দলে যাননি। দীপা দাশমুন্সি থেকে অদিতি মু্ন্সি- কেউ তো স্বামীসঙ্গ ত্যাগ করেননি। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসে সাংসদ হন মালা রায়। তাঁর স্বামী নির্বেদ রায়ও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন।

পদ বা ক্ষমতা পেতে কেউ তো দাম্পত্যের দম বার করেননি। নিয়মের জটিলতায় অনেকেই পুরসভা বা পঞ্চায়েতের সদস্য হতে পারেন না। বউদের প্রার্থী করে ওয়ার্ডে ছড়ি ঘোরান। রাজ্যে এমন কয়েকশো উদাহরণ আছে। সবই তো একসঙ্গে থাকার প্রতীক। সেখানে নতুন ট্রেন্ড সেট করলেন সুজাতা মণ্ডল। তবে তৃণমূলে যোগ দিয়ে আশা করেছিলেন সাংসদ স্বামীও পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে আসবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। সময়ের সঙ্গে তাঁদের দাম্পত্যের দূরত্ব বেড়েছে। এখন তাঁরা প্রাক্তন। লোকসভা ভোটে প্রতিপক্ষ।

সুজাতার দেখানো পথে হেঁটে এবার দলবদল স্বস্তিকার। বঙ্গ রাজনীতিতে নয়া বিড়ম্বনা। এই স্বস্তিক চিহ্নে কী মুকুটহীন হবে রানাঘাট? অধিকার হারাবেন মুকুটমণি? এসবই এখনকোটি টাকার প্রশ্ন।