কলকাতা: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ঘিরে উত্থাপিত হল ভয়ানক বাস্তবতা। দেশের উচ্চসভার মঞ্চে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গের ৭০টিরও বেশি মেডিক্যাল কলেজ প্রয়োজনীয় মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি, দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানই (bengal medical colleges fail standards)।
রাজ্যসভায় এক লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া প্যাটেল জানিয়েছেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মোট ৩৪টি এবং ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আরও ৩৭টি কলেজকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলিতে ফ্যাকাল্টির অভাব, পরিকাঠামোগত দুর্বলতা এবং ক্লিনিক্যাল প্যারামিটারে ঘাটতি রয়েছে।
এই কলেজগুলিকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (NMC)। পাশাপাশি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কিছু প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে এবং ২০২৫-২৬-এ শুধুমাত্র শর্তসাপেক্ষে এমবিবিএস আসন রিনিউ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিশেষভাবে নজরে এসেছে সঞ্জীবন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, যাদের বিরুদ্ধে NMC-এর অনুমোদন ছাড়াই কোর্স চালানোর অভিযোগে চলতি বছরের ১৯ মে নোটিস জারি করা হয়।
একই দিন আন্ডারগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড (UGMEB) একটি সতর্কতা জারি করে। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে, NMC-র স্বীকৃতি ছাড়াই যেসব প্রতিষ্ঠান নিজেকে স্বীকৃত বলে দাবি করছে ও মেডিক্যাল কোর্সে ভর্তি নিচ্ছে, তারা আইনি ও নৈতিক দুই দিক থেকেই শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করছে।
এই প্রসঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়েছে এমন একটি সময়ে যখন রাজ্যে চিকিৎসা শিক্ষার চাহিদা আকাশছোঁয়া, আর বহু ছাত্রছাত্রী এমবিবিএস আসনের জন্য প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এই প্রতিষ্ঠানগুলির অনিয়ম, স্বীকৃতি সংক্রান্ত জটিলতা এবং মানের অভাব গোটা স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যবস্থাকেই প্রশ্নের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে।
এখন দেখার, এই তালিকাভুক্ত মেডিক্যাল কলেজগুলির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কমিশন বা রাজ্য প্রশাসন কতটা কড়া পদক্ষেপ নেয় এবং ভবিষ্যতের চিকিৎসা শিক্ষার গুণমান রক্ষায় কী ধরনের রূপরেখা গ্রহণ করে।