পশ্চিমবঙ্গে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন বিজেপি সাংসদের

পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সম্প্রতি সংসদে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাতে চান, পশ্চিমবঙ্গের গাঁজাখোর বা মাদকাসক্তদের সংখ্যা কত এবং এই…

Speculation Grows Over New Bengal BJP President Amid Suspension of Organizational Elections

পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সম্প্রতি সংসদে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাতে চান, পশ্চিমবঙ্গের গাঁজাখোর বা মাদকাসক্তদের সংখ্যা কত এবং এই বিষয়ে সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে। সৌমিত্র খাঁয়ের প্রশ্নের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যে মাদকাসক্তির পরিমাণ এবং তার প্রতিকারমূলক পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া। তিনি তিনটি প্রধান প্রশ্ন রেখেছেন: প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গে মাদকাসক্তদের সংখ্যা এবং তাদের জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান, দ্বিতীয়ত, রাজ্যে মাদকাসক্তি নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রভাব, এবং তৃতীয়ত, মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন ও নেশামুক্তি সম্পর্কে বর্তমান পরিস্থিতি কী।

সাংসদ সৌমিত্র খাঁ নিজের প্রশ্নে স্পষ্টভাবে বলেছেন, মাদকাসক্তদের মধ্যে গাঁজার সেবনকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ২০১৮-২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের মাদক কারবারের মধ্যে গাঁজা বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরিমাণ অন্যান্য মাদক থেকে বহুগুণ বেশি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে বাজেয়াপ্ত হওয়া গাঁজার পরিমাণ ২৭ হাজার কেজিরও বেশি, যা অন্যান্য মাদকের মিলিত পরিমাণের প্রায় ছ’গুণ।

   

সৌমিত্র খাঁ নিজে এই পরিসংখ্যানকে সঠিক বলে मानছেন এবং তিনি মনে করেন, ‘‘এই পরিসংখ্যান থেকে পরিষ্কার, গাঁজা সেবনকারীদের সংখ্যা এখানে অত্যন্ত বেশি।’’ তবে, তিনি শুধু গাঁজাখোরদের বিষয়ে তথ্য জানতে চাননি, বরং সব ধরনের মাদকাসক্তদের বিষয়ে বিস্তারিত পরিসংখ্যান এবং তাঁদের পুনর্বাসন ব্যবস্থা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে চান।

এছাড়া, ‘নেশামুক্ত ভারত অভিযান’-এর বাস্তবায়ন এবং তার কার্যকারিতা সম্পর্কে সৌমিত্র খাঁ জানতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ সব নেশা থেকে মানুষকে দূরে রাখতে নজরদারি প্রয়োজন। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে, তা জানাটা খুবই জরুরি।’’

প্রশ্ন উঠেছে, মদ্যপান বা গাঁজা সেবনকারীদের উপর নজরদারি কীভাবে কার্যকরী হবে? সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘‘যারা নিয়মিত মদ্যপান করেন, তাদের উপর নজরদারি সহজ। কিন্তু গাঁজা, কোকেন বা অন্যান্য মাদকের ক্ষেত্রে সেটা কিছুটা কঠিন। তবুও, এলাকার ভিত্তিতে নজরদারি বাড়ানো গেলে পরিস্থিতি বোঝা যাবে।’’

রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই প্রশ্নের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলের মুখ থেকে যে ধরনের বক্তব্য বের হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে থেকেই সৌমিত্র খাঁয়ের এই প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।’’

বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গে মাদকাসক্তির পরিমাণ এবং তার প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে, মাদকাসক্তি নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করেন।