ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বঙ্গে কমছে শীত, বাড়ছে উষ্ণতা

west-bengal-weather-update-17-november-kolkata-forecast

কলকাতা: বঙ্গে শীতের (Weather Updated) আমেজ ইতিমধ্যেই অনুভূত হতে শুরু করেছিল। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে রাতের দিকে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে নামছিল, সকালবেলায় মাটির কাছাকাছি হালকা কুয়াশা জমছিল। কিন্তু হেমন্তের সেই স্বস্তির আবহাওয়া আবার থমকে যেতে চলেছে। ফের বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নতুন নিম্নচাপ অঞ্চল, যার জেরে আগামী কয়েকদিনে রাজ্যের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।

Advertisements

আলিপুরের আপডেট অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কা সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল গঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সেটি দক্ষিণ উপকূলের কাছে পৌঁছেছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫.৬ কিলোমিটার উচ্চতায় একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি করেছে। আবহাওয়াবিদদের অনুমান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই ঘূর্ণাবর্ত ক্রমে পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে পূর্ব ভারতের আবহাওয়ায়।

   

শনিবারের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আরও একটি নতুন নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। যদি তা ঘটে, তাহলে বঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিশেষত উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল।

গত এক সপ্তাহে বঙ্গে শীতের পূর্বাভাস বেশ জোরালো হয়। রাতের দিকে বিভিন্ন জেলায় তাপমাত্রা ১৪-১৬ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যেত। সকালের কুয়াশা শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছিল। কিন্তু নতুন নিম্নচাপের প্রভাবে ঠান্ডার তেজ কমে যাবে। আলিপুর দপ্তর জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই তাপমাত্রা গড়ে ২–৩ ডিগ্রি বাড়বে, যা দক্ষিণবঙ্গের রাতের ঠান্ডাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে।

উত্তরবঙ্গে নিম্নচাপের প্রভাব বেশি দেখা যাবে। দার্জিলিং ও পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও তাপমাত্রা সামান্যই বদলাবে, কিন্তু বৃষ্টির কারণে শীত কিছুটা আগ-পিছু করতে পারে। অন্যদিকে কোচবিহার, মালদহে আংশিক মেঘলা আকাশ দেখা দিলেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

Advertisements

দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলা কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া শুষ্কই থাকবে। কিন্তু আকাশে মেঘের আসা-যাওয়া বাড়বে। তার ফলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা উভয়ই বাড়তি উষ্ণতা অনুভব করাবে।

আবহাওয়াবিদদের কথায়, বঙ্গে শীতের পথ আটকে দিচ্ছে ক্রমাগত নিম্নচাপ সৃষ্টি এবং পূর্ব দিকের আর্দ্র বাতাস। সাধারণত ডিসেম্বরে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস প্রবেশ করে রাজ্যে শীতের প্রভাব স্থায়ী হয়। কিন্তু বর্তমানে বাতাসের গতিপথ বদলে গিয়ে শীতের আগমন ব্যাহত হচ্ছে।

এই কারণেই বঙ্গে শীতের দাপট অনুভব করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। আবহাওয়াবিদদের ধারণা, নিম্নচাপ কেটে গেলে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রা ক্রমে কমতে শুরু করবে এবং শীত স্থায়ীভাবে জাঁকিয়ে বসবে।