বাংলাপক্ষ, (Banglapokkho)পশ্চিমবঙ্গের বুকে এমন একটি সংগঠন যারা ঝালে, ঝোলে এবং অম্বলের মধ্যেও বাঙালির অধিকার খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। হিন্দিভাষীরা সবসময়ই এদের চক্ষুশূল। তা এ হেন সংগঠন যারা ভারতের ফুটবল টিমে বাঙালির অনুপস্থিতি থেকে শুরু করে বাংলায় কেন কেন্দ্র এইমস এর মতো হাসপাতাল দুটির বেশি তিনটি করেনি সব কিছু নিয়েই চিন্তা করে।
তারাই আজ পড়েছে ফাঁপরে। আগ বাড়িয়ে মরমে মরে যাওয়া কংগ্রেসকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে নিজেরাই হয়েছে আক্রান্ত। ঘটনার সূত্রপাত কিন্তু বাংলায় নয়, পাটনায়। ভোটাধিকার যাত্রায় কংগ্রেস নেতা এবং বিখ্যাত গান্ধী পরিবারের সন্তান রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেন। ব্যাস তারপরেই শুরু হয় বিজেপির বীরপুঙ্গবদের ভাঙচুর।
সেই আঁচ এসে পড়ে কলকাতাতেও। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান কার্যালয় বিধান ভবনে হামলা চালায় বঙ্গ বিজেপির একটি দল। যার নেতৃত্ব দেন পামেলা মাদক মামলায় জড়িত আরেক মহান রাজনীতিবিদ রাকেশ সিং। শুধু ভাঙচুর নয় রাহুল গান্ধী সহ আরও নেতাদের ছবি ছিঁড়ে তাতে কালি লেপে দিয়ে চলে যায় গেরুয়া বাহিনী। ঘটনার সূত্রপাত ঠিক তার পরেই।
সেই ঝালে ঝোলে অম্বলের বাঙালি সংগঠন পৌঁছে যায় কংগ্রেসের কার্যালয়ে। তারা ভেবেছিল বিজেপি ভাঙচুর করেছে এই ফাঁকে বাংলা ও বাঙালি নিয়ে কিছু লেকচার দেওয়া যাবে। প্রকাশ করা যাবে আজকালকার তৃণমূলী বাঙালি অস্মিতা। কিন্তু বাংলাপক্ষ হয়তো ভুলে গিয়েছিল যে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
এতদিন বাঙালির অধিকার চেয়ে হিন্দিভাষীদের ধমকে চমকে সমাজ মাধ্যমে নিজেদের বীরত্বের ভিডিও প্রকাশ করত বাংলাপক্ষ। আজ সেই হিন্দিভাষী কংগ্রেসের নেতারাই নাকি সাবেক ব্যাটার বীরেন্দ্র সহবাগের মত ব্যাটিং করে বাংলাপক্ষকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছে।
বাংলাপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা গর্গ চট্টোপাধ্যায় একটি ভিডিও বার্তায় যথেষ্ট দুঃখের সঙ্গে জানিয়েছেন যে কংগ্রেসের বিধান ভবনে পৌঁছে অমৃতবানী শুরু করতেই কয়েকজন কংগ্রেস নেতা যেমন রাহুল পান্ডে, প্রমোদ পান্ডে এবং বড়বাজারের সবচেয়ে বড় গুন্ডা, কংগ্রেস কাউন্সিলার সন্তোষ পাঠক সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের উপর এলোপাথাড়ি আক্রমণ শুরু করে।
গর্গর ভাষায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার নিজেও এই অতর্কিত আক্রমণে হতভম্ব হয়ে যান। তিনি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও রাহুল, প্রমোদ এবং সন্তোষ ঝোড়ো ছন্দে ব্যাটিং চালিয়ে যান বলেও জানিয়েছেন গর্গ। তবে এখানেই শেষ নয়। বাংলাপক্ষ আক্রান্ত হয়েও ভুলে যায়নি তারা বাঙালি।
তাই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তারা লিখেছে যে একটি মাত্র লোকসভা আসন জিতেছে কংগ্রেস তাও বাঙালিদের ভোটে। তাদের বক্তব্য বাঙালি ভোটে জিতেও কংগ্রেস প্রধানত নিয়ন্ত্রিত হয় হিন্দি এবং উর্দুভাষীদের দ্বারা।
তবে বাংলাপক্ষর এই আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সমাজমাধ্যমে সমোলোচকরাও সরব হয়েছেন এবং প্রত্যেকেই একই সুরে বলেছেন বিজেপি কংগ্রেস ভাঙচুর করেছে।
অনবদ্য গুরপ্রীত! তাজাকিস্তানকে হারিয়ে নেশনস কাপ শুরু করল ভারত
এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে বাঙালি অস্মিতা না খুজতে গেলেই বোধহয় ভালো হত। তার কারণ বিজেপিতে অবাঙালি আছে, কিন্তু যে দলকে সমবেদনা জানানোর অছিলায় হিন্দিভাষীদের ধমকাতে চমকাতে গিয়েছিল বাংলাপক্ষ, সেই দলেও কিন্তু হিন্দিভাষী আছে। আর এই ভুল করে তাদের গতে বাঁধা বানী শুরু করতেই এই বিপত্তি।