ব্যান্ডেল থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের ছাইগাদা থেকে ছাই নিয়ে ফেরার সময় বাঁশবেড়িয়ার গঙ্গায় ডুবন্ত বাংলাদেশি কার্গো জাহাজ (Bangladeshi cargo ship) “এডি বছিরউদ্দিন কাজি”। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনা ঘটেছে গত কয়েকদিন আগে, যখন বাংলাদেশি কার্গো জাহাজটি ত্রিবেনী বিটিপিএস থেকে ছাই নিয়ে দেশে ফেরার পথে বাঁশবেড়িয়া গঙ্গার মধ্যে সমস্যার সম্মুখীন হয়। জাহাজটির কর্মীরা জানিয়েছেন, জাহাজের তলায় একদম অপ্রত্যাশিতভাবে তীব্র শব্দ শোনা যায়, এরপর জল ঢুকে পড়তে থাকে। দ্রুত পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে জাহাজটি কাত হয়ে যায়। অবশেষে চালকের কেবিন ছাড়া প্রায় পুরো জাহাজটি ডুবে যায়।
এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে জাহাজের কর্মীরা খুব দ্রুত স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে, জল কমাতে কিছুটা অংশ জেগে ওঠে, তবে বিপদমুক্ত হওয়ার জন্য আরও কাজ করতে হয়। এরপর ছাই খালি করে জাহাজের ওজন কমানোর চেষ্টা করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা দ্রুত সেখানে পৌঁছান এবং উদ্ধারকার্য শুরু করেন।
এদিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জাহাজের কর্মীরা যে আন্তরিকতা এবং প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। জল কমানোর পর, ছাই খালি করা শুরু হয়, যা সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া। তবে, জাহাজটি পুরোপুরি উদ্ধার করতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানা গেছে। প্রাথমিকভাবে, ছাই খালি করতে অন্তত সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে।
জাহাজটি যেহেতু ডুবেছে, এটি মেরামত করতে এবং তার পরবর্তী গন্তব্য বাংলাদেশে ফিরতে যথেষ্ট সময় এবং শ্রমের প্রয়োজন হতে পারে। তবে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা চলছে। একে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন এবং উদ্ধারকারী দল নিজেদের কর্তব্য পালন করে চলেছে।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তারা মনে করছেন, পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা যায়। সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও তীক্ষ্ণ নজরদারি এবং তাত্ক্ষণিক উদ্ধার ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে, বিশেষত এমন নদী অঞ্চলে যেখানে বড় নৌযান চলাচল করে।
প্রশাসন জানিয়েছে, উদ্ধার কাজ সম্পূর্ণ হলে এবং জাহাজটি পুনরায় চালানোর জন্য প্রস্তুত হলে, তা তৃতীয় পক্ষের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে। এরপর জাহাজটির মেরামত এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়াও, দুর্ঘটনাটি স্থানীয় জলযান নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও কিছু প্রশ্ন তুলেছে। জাহাজটির মালিকানা সংস্থা এবং বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সঠিক তদন্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে, স্থানীয় মানুষের মধ্যে এখনও উদ্বেগ রয়েছে যে, এ ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে আরও ঘনীভূত হতে পারে যদি নদীপথের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী না হয়।