সমাজকল্যাণে নজির গড়ল ধনিয়াখালির পূজা কমিটি

আশিস কুমার ঘোষ, হুগলি: শারদোৎসব (Durga Puja 2025) মানেই বাঙালির ঘরে ঘরে আনন্দের রঙ ছড়িয়ে পড়া। কিন্তু সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে সেই আনন্দ পৌঁছে দেওয়া…

আশিস কুমার ঘোষ, হুগলি: শারদোৎসব (Durga Puja 2025) মানেই বাঙালির ঘরে ঘরে আনন্দের রঙ ছড়িয়ে পড়া। কিন্তু সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে সেই আনন্দ পৌঁছে দেওয়া একান্ত জরুরি। সেই মানবিক ভাবনাকেই বাস্তবে রূপ দিতে ধনিয়াখালির দশঘড়া স্কুল পাড়া পূজা কমিটির পক্ষ থেকে পঞ্চমীর রাতে আয়োজিত হল এক সমাজকল্যাণমূলক বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি।

Advertisements

এই মহতী উদ্যোগের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন ধনিয়াখালি বিধানসভার মাননীয়া বিধায়ক অসীমা পাত্র এবং ধনিয়াখালি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সৌমেন ঘোষ। সমাজের প্রান্তিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের দুর্গোৎসবের আনন্দের অংশীদার করার লক্ষ্যে এই বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

   

অনুষ্ঠানের সূচনালগ্ন থেকেই ছিল এক অনন্য আবহ। সকল সম্মানীয় অতিথিদের পুষ্পস্তবক, ফুলের মালা এবং স্মারক মেমেন্টো দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর ফিতা কেটে ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন অতিথিবৃন্দ।

প্রায় এক হাজার গরীব ও অসহায় মহিলার হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয় এই কর্মসূচির মাধ্যমে। উৎসবের আনন্দের সাথে সাথে তাদের মুখে ফুটে ওঠে অমূল্য হাসি। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন উপস্থিত সকলেই।

এই অনুষ্ঠানে আনুমানিক তিন হাজার দর্শনার্থী উপস্থিত ছিলেন, যা স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ এবং সহানুভূতির প্রতিফলন। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সুষ্ঠু পরিচালনায় ছিলেন সৌমেন মুখার্জি, যাঁকে সহযোগিতা করেন উত্তম মাঝি ও অন্যান্য সদস্যরা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ধনিয়াখালির বিধায়ক মাননীয়া অসীমা পাত্র বলেন, “দুর্গোৎসব কেবলমাত্র আনন্দের উৎসব নয়, এটি সমাজকল্যাণ ও সহমর্মিতার প্রতীক। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল সমাজের সেই অংশের মুখে হাসি ফোটানো যাদের কাছে উৎসব মানেই প্রয়োজনের চেয়ে কম।”

পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সৌমেন ঘোষ বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ সমাজে একতা ও ভালোবাসার বার্তা দেয়। আমরা চাই ভবিষ্যতেও এমন কর্মসূচির মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে উৎসবের আনন্দে শামিল করতে।”

স্থানীয় বাসিন্দারা এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, দুর্গাপুজোর আনন্দ তখনই পরিপূর্ণ হয় যখন সমাজের প্রতিটি মানুষ সেই আনন্দে অংশগ্রহণ করতে পারে। এই বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি কেবল মানবিকতার এক উদাহরণই নয়, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতারও এক প্রতিচ্ছবি।

দশঘড়া স্কুল পাড়া পূজা কমিটির এই মানবিক পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সমাজকল্যাণমূলক কাজের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এবং আগামী দিনেও এমন কর্মসূচি অন্য সংগঠনগুলিকেও অনুপ্রাণিত করবে।