দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার সহকারী সাব ইনস্পেক্টর (ASI) গোলাম মর্তুজা এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ, নিজের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হন। ঘটনাটি ঘটেছে তপন ব্লকের দ্বীপখন্ডা গ্রামে। বর্তমানে তিনি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী, শাশুড়ি ও শ্যালককে পুলিশ গ্রেপ্তার (Arrest) করেছে।
জানা গিয়েছে, ৩৬ বছর বয়সী গোলাম মর্তুজা পেশায় একজন পুলিশ আধিকারিক এবং ইটাহারের বাসিন্দা। তিনি গত আড়াই বছর ধরে তপন থানায় কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তাঁর পরিচয় হয় দ্বীপখন্ডা গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে। পরে তিনি তাঁকে বিয়ে করেন, যদিও তাঁর প্রথম স্ত্রী ইটাহারে রয়েছেন এবং এখনও জীবিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় স্ত্রী ক্রমাগত তাঁকে বিয়ের জন্য ব্ল্যাকমেল করতেন। সমাজ ও পারিবারিক চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত ওই তরুণীকে বিয়ে করতে বাধ্য হন গোলাম। কিন্তু বিয়ের পরেও দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক একেবারেই স্বাভাবিক ছিল না। প্রায়শই বিবাদের খবর মিলত। অভিযোগ, দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঘরে তুলতে চাননি গোলাম। এমনকি তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
রবিবার বিকেলে গোলাম মর্তুজা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে যান। অভিযোগ, সেখানে কোনও অজুহাতে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় এবং তারপর হঠাৎ করেই বচসার সূত্রপাত ঘটে। গোলামের দাবি, তাঁকে লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। মাথায় গুরুতর আঘাতও পান তিনি। পরে তপন থানার পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পাল্টা বক্তব্য দিয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রীর ভাই রসিদুল সরকার। তিনি বলেন, “আমার বোনকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করার পর থেকেই নানা টালবাহানা করছিলেন গোলাম। বোনকে কখনও ঘরে তোলেননি। আমরা আলোচনার জন্য ডাকলেও আসেননি। আজ হঠাৎ এসে বাড়িতে বচসা শুরু করেন। এরপরেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়।”
তপন থানার আইসি জন মেরি ভিয়ান্নে লেপচা বলেন, “এটি একটি পারিবারিক বিবাদ। গোটা বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। আক্রান্ত পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত তিনজনকে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে।”
দ্বিতীয় বিয়ের সামাজিক ও পারিবারিক জটিলতা আবারও সামনে এল এই ঘটনার মাধ্যমে। একজন পুলিশকর্মী হওয়া সত্ত্বেও গোলাম মর্তুজা পারিবারিক সহিংসতার শিকার হলেন। তদন্তে বেরিয়ে আসতে পারে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।