বছরের পর বছর ধরে ভাঙড়ের (Bhangar) রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তাল। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এবং পরে এখানে চলছিল উত্তেজনা, যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আরাবুল (Arabul) ইসলাম। পঞ্চায়েত সমিতির (Panchayat Samiti) সভাপতির পদে থাকা আরাবুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার হত্যাকাণ্ডে তাঁর নাম জড়ানো। এরপর গত বছর জুন মাসে গ্রেপ্তার হন তিনি এবং ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বিজয়গঞ্জ বাজার থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
তারপর থেকে আরাবুল ইসলামকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে ভাঙড় ২ ব্লকের তৃণমূল শিবিরে শওকত মোল্লার প্রভাব বাড়তে থাকে। এই সময়েই ভাঙড় ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সোনালী বাছাড়কে কার্যকারী সভাপতি করা হয়। কিন্তু আরাবুল ইসলাম জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এক নতুন জল্পনা শুরু হয়।
২ জুলাই শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়ে মুক্তি পাওয়ার পর ১০ মাস পর তিনি পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে ফেরেন (returns)। এর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় এক নতুন রাজনৈতিক পালাবদল। তাঁর ফিরে আসায় ভাঙড়ের রাজনৈতিক মহলে অস্থিরতা বাড়তে শুরু করেছে। সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেও বিরোধীরা আশঙ্কা করছে যে, এই পুনরায় তাঁর ক্ষমতায় ফিরে আসা এলাকায় নতুন করে অশান্তি তৈরি করতে পারে।
এদিকে, আরাবুল ইসলামের ফিরে আসার পর শওকত মোল্লা ও তাঁর সমর্থকদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শওকত মোল্লা এবং তাঁর ঘনিষ্ঠরা, বিশেষ করে খাইরুল ইসলামরা, আরাবুলকে রাজনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। তাদের মতে, আরাবুলের ক্ষমতায় ফেরার ফলে নতুন করে রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি হতে পারে, যা এলাকার শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে।
ভাঙড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন খুবই অস্থির এবং সেখানে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে, ১০ মাস পর আরাবুল ইসলামের পঞ্চায়েত অফিসে ফিরে আসা ভাঙড়ের রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বড় একটি পরিবর্তন হতে চলেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়, তিনি কি পারবেন আবার নিজের রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে, নাকি নতুন অশান্তির সূচনা হবে।