দামোদর নদের (Damoder River) তীরে থেকে উদ্ধার হয়েছে এক প্রাচীন সূর্য মূর্তি, যা ইতিহাসপ্রেমী ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। রবিবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের হরিপুর এলাকায় পিকনিক করতে গিয়ে একদল যুবক এই মূর্তিটি খুঁজে পান। এরপর, দ্রুত এই খবর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছানো হলে, তারা মূর্তিটি উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে মূর্তিটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের (Bardwan University) মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং এখন তার ইতিহাস জানার চেষ্টা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতে প্রশিক্ষণের কথা ছিল, ৫০ বিচারককে ভারতে আসতে নিষেধাজ্ঞা ইউনূসের
হরিপুর এলাকার দামোদর নদের তীরে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন কয়েকজন যুবক। তারা যখন নদীর ধারে হাঁটছিলেন, তখনই তাদের চোখে পড়ে একটি প্রাচীন সূর্য মূর্তি। মূর্তিটি আধুনিক সময়ের তুলনায় একেবারেই আলাদা, এবং এতে সূর্যদেবের প্রতিকৃতি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মূর্তিটির বিশালতা এবং প্রাচীনত্ব দেখে যুবকরা বুঝতে পারেন যে এটি কোনো ঐতিহাসিক এবং মূল্যবান প্রত্নসম্পদ হতে পারে, ফলে তারা দ্রুত খবর দেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষকে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়ামের আধিকারিক শ্যামসুন্দর বেরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মূর্তিটি পরীক্ষা করেন। তিনি মূর্তির খুঁটিনাটি দেখে জানিয়ে দেন যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নসম্পদ হতে পারে। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে পরামর্শ করে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে মূর্তিটি উদ্ধার করে মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে, কারণ এমন প্রাচীন মূর্তি উদ্ধার হওয়াকে তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন।
বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে অনুমান করছেন, উদ্ধার হওয়া মূর্তিটি পাল বা সেন যুগের হতে পারে। এই ধরনের মূর্তি সাধারণত সেই সময়ের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক প্রতিচ্ছবি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পাল ও সেন যুগে সূর্য মূর্তির বিশেষ গুরুত্ব ছিল, এবং সূর্যদেবকে প্রাচীন ভারতীয় বিশ্বাসে বিশেষভাবে পূজা করা হতো। সূর্যদেবের আরাধনা এবং তাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন শিল্পকর্ম তৈরি করা হয়েছিল, যা আজও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
চিনের পর এবার হংকংয়ে হানা এইচএমপিভির! সতর্ক প্রতিবেশি দেশগুলিও
এখন, মূর্তিটির ইতিহাস জানার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করছে। তারা মূর্তিটির বয়স, রচনাশৈলী এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। এর পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসনও মূর্তির যথাযথ সংরক্ষণ এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
জেডিইউ-ইন্ডিয়া জোট! লালুর প্রস্তাবে কী বললেন নীতীশ?
এটি একটি বিশেষ ঘটনা, যেহেতু বাংলাদেশ এবং ভারতের ইতিহাসে সূর্যদেবের মূর্তির গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রাচীন মূর্তিগুলি শুধুমাত্র ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যই নয়, বরং অতীতের সমাজ ও মানুষের চিন্তাভাবনা, জীবনযাপন এবং শিল্পকলার এক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। এই মূর্তির মাধ্যমে আমরা আরও ভালোভাবে জানতে পারব অতীতের শিল্পের বিবর্তন এবং সেই সময়ের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির গভীরতা।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এই মূর্তির ওপর গবেষণা চালিয়ে এটিকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করতে পারেন, যা ইতিহাসপ্রেমী এবং প্রত্নতত্ত্ববিদদের জন্য একটি বড় উপহার হতে পারে।