রেমাল ঘূর্ণিঝড় (Remal Cyclone) বাংলাদেশে চলে গেছে। প্রতিবেশি দেশের উপকূল লণ্ডভণ্ড। রবিবার রাতে ঘূর্ণির এই গতিপথের একপাশে পড়েছিল সন্দেশখালি। এলাকাবাসীদের বক্তব্য, রেমালের রাতের থেকেও ভয়াবহ রায়মঙ্গল নদী। সোমবার ভরা কোটাল থাকায় সমুদ্রের ঢেউয়ের মত আগ্রাসী রূপ নিয়েছে রায়মঙ্গল। এই পরিস্থিতি ঘূর্ণিঝড়ের থেকেও ভয়াল। কারণ, রেমাল ঘূর্ণি সরাসরি আঘাত করেনি পশ্চিমবঙ্গে। তবে উপকূলে ভয়াল জলোচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। এদিকে সামাজিক মাধ্যমে উত্তর ২৪পরগনার সন্দেশখালি থেকে যে ছবি আসছে তাতে রায়মঙ্গল নদী যেন উত্তাল বঙ্গোপসাগর!
সামাজিক মাধ্যমেই দেখা যাচ্ছে ঝঞ্ঝা পরবর্তী উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জের লন্ডভন্ড পরিস্থিতি। ঝড়ের ক্ষতি ও নদী বাঁধের ভাঙনে সন্দেশখালির বিস্তীর্ণ এলাকা নোনা জলমগ্ন। পানীয় জলের অভাব মেটাতে বাম সংগঠন রেড ভলেন্টিয়ার্স নেমেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তৃণমূল ও বিজেপির কেউ নেই। তারা বলছেন পাশে আছেন কেবল প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক নিরাপদ সরদার।
পড়ুুন রেমাল বিপর্যয়ে রেড ভলেন্টিয়ার্সদের ভূমিকা: Remal Cyclone: রেমাল বিধ্বস্ত সন্দেশখালির ভরসা রেড ভলেন্টিয়ার্স, ‘ঝড়ে উড়ে গেল তৃণমূল-বিজেপি’
লোকসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের হয়ে বসিররাট আসনের প্রার্থী নিরাপদ সরদার। তিনি রেমাল ঝড়ের সময় সন্দেশখালিতেই ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে দেখা যায় নিরাপদ সরদার এলাকাবাসীকে নিরাপদে রাখতে নেমে পড়েছেন। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, তৃণমূল ও বিজেপি ঝড়ের সময় কই?
লোকসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪পরগনার সন্দেশখালি তীব্র রাজনৈতিক ইস্যু। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে সন্দেশখালিতে মহিলাদের নির্যাতন অভিযোগ ও সাজানো ঘটনার দাবি পাল্টা দাবি চলছে। বসিরহাট লোকসভার অন্তর্গত সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে সরব সিপিআইএম। তাদের দাবি, সন্দেশখালির সাধারণ মানুষের কথা ভুলে তৃণমূল ও বিজেপি ভোট টানতে মরিয়া। রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজাহানকে ধরতে গিয়ে মার খেয়েছিলেন ইডি অফিসাররা। সেই ঘটনার পর প্রাক্তন বাম বিধায়ক নিরাপদ সরদারকে গ্রেফতার ঘিরে রাজনৈতিক মহল ছিল গরম। পরে জামিন পান তিনি। এরপর তাঁকে বসিরহাট থেকে প্রার্থী করে বাম জোট। তিনি এখন ভোট ভুলে নেমেছেন উদ্ধার কাজে।
ভারত ও বাংলাদেশে বিস্তৃত সুন্দরবন অঞ্চলের রায়মঙ্গল নদীটি পশ্চিমবঙ্গে উত্তর চব্বিশ পরগণা ও বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত ঘেঁষে প্রবাহিত হয়েছে। উত্তর ২৪পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের কাছে ইছামতি নদী কয়েকটি জলধারায় বিভক্ত হয়েছে। রায়মঙ্গল ভয়াবহ তার বিশাল ঢেউয়ের কারণে।
রায়মঙ্গলসহ একাধিক নদীর বাঁধ ভেঙেছে। ভরা কোটালে সোমবার সন্ধ্যায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে এমনই অনুমান আবহাওয়াবিদদের। হাসনাবাদে ইছামতি নদীর জল বাড়ছে। রায়মঙ্গল নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে সন্দেশখালি, তুষখালি , আতাপুরে। কোনোক্রমে টিকে রয়েছে মাটির বাঁধ।