নতুন ক্রীড়াঙ্গনে অবশেষে জায়গা পেল বাংলা ভাষা, জয় বাংলা পক্ষের আন্দোলনের

পাণ্ডবেশ্বর: ক্ষুদিরাম বসুর নামাঙ্কিত ক্রীড়াঙ্গনে (Khudiram Bose Stadium) মাতৃভাষা বাংলার অমর্যাদাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আন্দোলনে মিলল সাফল্য। গত ২৯শে জুলাই, বাংলার বীর শহীদ ক্ষুদিরাম…

নতুন ক্রীড়াঙ্গনে অবশেষে জায়গা পেল বাংলা ভাষা, জয় বাংলা পক্ষের আন্দোলনের

পাণ্ডবেশ্বর: ক্ষুদিরাম বসুর নামাঙ্কিত ক্রীড়াঙ্গনে (Khudiram Bose Stadium) মাতৃভাষা বাংলার অমর্যাদাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আন্দোলনে মিলল সাফল্য। গত ২৯শে জুলাই, বাংলার বীর শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর নামে নির্মিত হলেও সেই ক্রীড়াঙ্গনের প্রবেশপথে বাংলা ভাষার উল্লেখ না থাকায় প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বাংলা পক্ষের পাণ্ডবেশ্বর শাখা। এই অবমাননার প্রতিবাদে তাঁরা ঝাঁঝরা এরিয়ার ইসিএল (ECL – Eastern Coalfields Limited) কর্তৃপক্ষের জেনারেল ম্যানেজারকে ডেপুটেশন দিয়ে বাংলার সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন।

ডেপুটেশনের দিনই ইসিএল কর্তৃপক্ষ বাংলা পক্ষকে আশ্বস্ত করে যে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের প্রবেশদ্বারে বাংলা ভাষায় সাইনবোর্ড বসানো হবে। সেই প্রতিশ্রুতি রাখল ইসিএল – আজ ৩১শে জুলাই, শহীদ ক্ষুদিরাম বসু ক্রীড়াঙ্গনের ফটকে গর্বের সঙ্গে জায়গা পেল বাংলা ভাষা।

   

এই ঘটনার পিছনে ছিল সুসংগঠিত গণআন্দোলন ও সাংগঠনিক চাপ। বাংলা পক্ষের পাণ্ডবেশ্বর অঞ্চলের নেতৃত্ব জানান, “ক্ষুদিরাম বসুর নাম নিয়ে যদি ইংরেজি হরফে সব লেখা হয় আর বাংলার ছোঁয়া না থাকে, তবে তা এই মাটির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা শুধু ভাষার অধিকার নয়, শহীদের সম্মান রক্ষার জন্যই দাঁড়িয়েছিলাম।”

শুধু সাইনবোর্ডেই থেমে থাকেনি বাংলা পক্ষের দাবি। তাঁরা ঝাঁঝরা ইকো পার্কের উল্টো দিকে অবস্থিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির সুরক্ষা নিয়েও সরব হন। বর্তমানে ওই দুই মনীষার মূর্তি খোলা আকাশের নিচে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। বাংলা পক্ষের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, ওই মূর্তির উপর ছাউনির ব্যবস্থা করতে হবে এবং পারিপার্শ্বিক পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে।

Advertisements

ইসিএল কর্তৃপক্ষ এই দাবির প্রতিও সহমত জানায় এবং জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ছাউনির কাজ শুরু করা হবে।

এই ঘটনাটি শুধুমাত্র একটি সাইনবোর্ড বা ছাউনি বসানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি বৃহৎ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বার্তা দেয় যে, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে উপেক্ষা করে এই বাংলায় কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান আর নিরুত্তর থাকতে পারে না। বাংলার শহীদের নামাঙ্কিত স্থানে বাংলার ভাষা থাকবে না – এই অসংগতি দূর করা শুধুই একটি দাবি ছিল না, ছিল আত্মপরিচয়ের লড়াই।

বাংলা পক্ষের লাগাতার আন্দোলন ও সচেতন প্রচেষ্টার ফলে আজ ক্ষুদিরাম বসু ক্রীড়াঙ্গনের প্রবেশ পথে বাংলা ভাষা গর্বের সঙ্গে স্থান পেল। ইসিএলের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যদি আগামী দিনগুলিতে মূর্তির ছাউনি এবং অন্যান্য সংস্কার কাজ বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি এক নতুন শ্রদ্ধার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।