দুর্ঘটনা রোধে চালককে সতর্ক করতে পুলিশের সেফটি ডিভাইস

ফের জাতীয় সড়কে বাস দুর্ঘটনা (Accident)। এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে চালকদের ঘুমিয়ে পড়া। পুলিশ মনে করছে, চালকের অত্যধিক ক্লান্তিই এই দুর্ঘটনার পেছনে…

Accident Prevention: Police Safety Device to Alert Drivers

ফের জাতীয় সড়কে বাস দুর্ঘটনা (Accident)। এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে চালকদের ঘুমিয়ে পড়া। পুলিশ মনে করছে, চালকের অত্যধিক ক্লান্তিই এই দুর্ঘটনার পেছনে প্রধান কারণ।  

পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের দাবি, সাম্প্রতিক অতীতে চালকদের ঘুমিয়ে পড়ার কারণে পাঁচটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে এক চালক মারা গেছেন আউশগ্রাম থানা এলাকায়। খণ্ডঘোষে ঘটেছিল আরও একটি দুর্ঘটনা, যেখানে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন থানার ওসির গাড়িচালক। সেই দুর্ঘটনায় ওসি সহ চার জন গুরুতর আহত হন এবং দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হয় তাদের।

   

জেলা পুলিশ দুর্ঘটনা রোধে বিশেষ সেফটি ডিভাইস ব্যবহার করার পক্ষে। পুলিশের দাবি, এই ডিভাইস ব্যবহারের ফলে কিছুটা সুরক্ষা পাওয়া গেছে। বিশেষত, যখন পুলিশ দলের কর্মকর্তারা দীর্ঘ পথে অপরাধীদের ধরতে ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসেন, তখন ওই গাড়িতে সেন্সর বসানো হয়। এর ফলে চালক ঘুমিয়ে না পড়ার নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।

এখন এই সেন্সরযুক্ত ডিভাইস যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়িতে বসানোর জন্য পুলিশ আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের কাছে আবেদন করেছে। তবে, এই আবেদনের কোনো ফল পাওয়া যায়নি। আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, ‘গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে আসা গাড়িচালকদের এই সেন্সরের কথা আমরা বারবার বলেছি কিন্তু কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা আইনি দিক থেকে কাউকে বাধ্য করতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ডিভাইসের দাম খুব বেশি নয়। মাত্র ৫০-৬০ হাজার টাকার মধ্যেই এটা স্থাপন করা যায়।’ তবে, পরিবহণ ব্যবসায়ীরা এই সেন্সর ব্যবহার করতে চান না। বর্ধমানের এক পরিবহণ ব্যবসায়ী লালপ্রসাদ সিং জানান, ‘গাড়ির টায়ার, যন্ত্রাংশ, মেনটেন্যান্স এবং চালক ও খালাসির বেতন বাবদ খরচের পর এই বাড়তি ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়।’

তবে সেন্সরটি কীভাবে কাজ করে? চালকের আসনের সামনে একটি সেন্সর থাকে। চালক যদি ৩ সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ করে রাখেন, তবে সেন্সর সঙ্কেত পাঠায় এবং গাড়িতে থাকা অ্যালার্ম বেজে ওঠে। ফলে, চালক সতর্ক হয়ে যান।

সেন্সর প্রস্তুতকারী সংস্থার আধিকারিক পঙ্কজ শর্মা জানান, ‘গাড়ির গতিবেগ ২০ কিমি/ঘণ্টার উপর থাকলে সেন্সর অ্যাক্টিভ হয়ে যাবে। অ্যালার্মের সাউন্ডে চালকের ঘুম ভেঙে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেউ সেন্সর ঢেকে রাখেও, তবুও অ্যালার্ম বেজে উঠবে।’

এই প্রযুক্তি নিয়ে জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ‘এটি খুব ভালো প্রযুক্তি। পরবর্তী রোড সেফটি বৈঠকে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করব।’