দমদম: দমদমের দুই প্রখ্যাত দুর্গাপুজো মণ্ডপে উপস্থিত হতে পারেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। দলীয় সূত্রের খবর, তিনি জয়পুরের জায়শ্রী ক্লাব ও অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল ক্লাবের পুজো পরিদর্শন করতে পারেন। সাধারণত বড় জনসভা বা মণ্ডপে সরাসরি উপস্থিতি কম রাখেন অভিষেক, তাই এবারের সম্ভাব্য সফর রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে।
অষ্টমী থেকে দশমীর মধ্যে যেকোনো এক দিনে তিনি মণ্ডপগুলোতে হাজির হতে পারেন। তবে সুনির্দিষ্ট সময় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। জায়পুর জায়শ্রী ক্লাবের পুজো এবছর বিশেষভাবে আলোচনার কেন্দ্রে। এখানে বাঙালি শ্রমিকদের দেশে ও বিদেশে সামাজিক অন্যায় এবং বঞ্চনার প্রতিফলন তুলে ধরা হয়েছে। পুজো শুরুর পর থেকেই দর্শকের ভিড় তুঙ্গে পৌঁছেছে, যা মণ্ডপটিকে আরও নজরকাড়া করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অভিষেকের উপস্থিতি শুধুমাত্র উৎসব উদযাপন নয়, বরং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তৃণমূল ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ করে আসছে এবং নির্বাচনের আগে জনগণের মধ্যে নিজের অবস্থান শক্ত করার পরিকল্পনা করছে।
সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর কারণে এই সফরের গুরুত্ব আরও বাড়েছে। সম্প্রতি দমদমের শিক্ষক সংগঠনের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেছেন, কমিটি ভাঙার বিষয়ে তাঁর সরাসরি কোনো জ্ঞান নেই, তবুও অভিষেক এবার তাঁর বিধায়ক এলাকায় পুজো পরিদর্শন করবেন।
সপ্তমীর দিনে সোশাল মিডিয়ায় অভিষেক লিখেছেন, “নবপত্রিকার পবিত্রতায় ডুবে সপ্তমী মা দুর্গার দিব্য উপস্থিতি আমাদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত করে। এই দিন নবজাগরণ ও জয়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।” যদিও এটি পুজোর শুভেচ্ছা হিসেবেই প্রকাশিত হয়েছে, রাজনৈতিক মহলে এটিকে সম্ভাব্য ইঙ্গিত হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, দুর্গাপুজো শুধু উৎসব নয়, মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের বড় মঞ্চ। নেতাদের উপস্থিতি সাধারণ মানুষকে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়। অন্যদিকে বিরোধী শিবিরের দাবি, এটি নিছক জনমুখী রাজনীতির আড়ালে দলের অবস্থান শক্ত করার কৌশল।
দমদমের দুটি মণ্ডপে অভিষেকের সম্ভাব্য উপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি শুধু পুজোর আনন্দ উদযাপন নয়, বরং নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। অভিষেকের সফর দমদমের সাধারণ মানুষের কাছে উৎসব ও রাজনৈতিক বার্তা একসাথে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।