রাজনীতির আঙিনায় ফের বিতর্কের কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক পুরনো মন্তব্য ঘিরে শুরু হওয়া আইনি জটিলতা এবার পৌঁছে গেল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে। ২০২০ সালের এক জনসভায় করা বক্তব্যের জেরে দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয়েছিল জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্রয় নিয়েছেন হাইকোর্টের।
মামলার শুনানি সম্পন্ন
সম্প্রতি জবলপুরের মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। বিচারপতি প্রমোদ কুমার আগরওয়ালের একক বেঞ্চে মামলাটি শুনানি শেষে রায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। আদালত এখনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করলেও, দুই পক্ষের যুক্তি শুনে রায়ের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনিল খারে ও মানন আগরওয়াল।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে। সেবার কলকাতায় এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ছেলে আকাশ বিজয়বর্গীয়কে ‘গুন্ডা’ বলে মন্তব্য করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্তব্যটি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। পরে, সেই মন্তব্যের জেরে আকাশ বিজয়বর্গীয় ভোপালের এমপি-এমএলএ আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন।
জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা Abhishek Banerjee Defamation Case
এই মামলায় বারবার আদালতের তলব সত্ত্বেও অভিষেক হাজির না হওয়ায়, ভোপালের এমপি-এমএলএ আদালত তাঁকে “পলাতক” ঘোষণা করে এবং জারি করে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই এবার তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
আবেদনে অভিষেকের পক্ষের যুক্তি, তিনি একজন সাংসদ, তাই তাঁকে “পলাতক” ঘোষণা করা আইনসম্মত নয়। তিনি আগেই আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন, যা আদালত বিবেচনা করেনি। তাঁর বক্তব্য, “আমি আদালত থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না। প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজিরা দিতে প্রস্তুত।”
রাজনৈতিক ভাবমূর্তির উপরও প্রভাব
আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার রায় কেবল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত আইনি অবস্থান নয়, বরং তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক ভাবমূর্তির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। দলীয় মহলেও এখন নজর হাইকোর্টের পরবর্তী পদক্ষেপে, দেখা যাক, আদালত কী নির্দেশ দেয় এই বহুল আলোচিত মানহানির মামলায়।


