কলকাতার দক্ষিণ (Abhaya) কলকাতা আইন কলেজে এক প্রথম বর্ষের ছাত্রীর উপর গণধর্ষণের ঘটনায় আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার অভয়ার বাবা গভীর ক্ষোভ ও বেদনা প্রকাশ করেছেন। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অভয়ার বাবা বলেন, “এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।
আমার মেয়ের ঘটনার পর রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে নেমেছিল। তারপরও এই ধরনের ঘটনা থামছে না। কলেজের ভিতরের মানুষরাই এই ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে সরকারের বড় দায় রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গ্রেফতার হওয়া তিনজনই তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) সঙ্গে যুক্ত।
এই রাজনৈতিক দলের উচিত এমন ঘটনা আর না ঘটে তা নিশ্চিত করা। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।” (Abhaya) এই ঘটনায় তিন অভিযুক্ত—টিএমসিপি নেতা মনোজিৎ মিশ্র (৩১), জাইব আহমেদ (১৯) এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায় ওরফে প্রমিত মুখার্জি (২০)—কে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
কসবা গণধর্ষণের ঘটনা (Abhaya)
২৫ জুন সন্ধ্যা ৭:৩০ থেকে ১০:৫০-এর মধ্যে দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে ২৪ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে গ(Abhaya)ণধর্ষণ করা হয়। অভিযোগকারিণীর অভিযোগ অনুযায়ী, মনোজিৎ মিশ্র তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা প্রত্যাখ্যান করায় তিনি হুমকি দেন এবং জাইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের সহায়তায় ধর্ষণ করেন।
অভিযুক্তরা ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেল করার হুমকি দেয়। ২৬ জুন কাসবা থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মনোজিৎ ও জাইবকে তালবাগান ক্রসিং-এর কাছ থেকে এবং প্রমিতকে ২৭ জুন ভোরে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে, এবং ফরেনসিক তদন্ত চলছে। ভুক্তভোগীকে চিকিৎসার জন্য কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
অভয়ার বাবার বক্তব্য (Abhaya)
অভয়ার বাবা (Abhaya) কসবা ঘটনাকে আরজি কর মামলার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “আমার মেয়ের ঘটনার পর আমরা ভেবেছিলাম সরকার নারী নিরাপত্তার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু এই ঘটনা প্রমাণ করছে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও নিরাপদ নয়।”
তিনি সরকারের উপর দায় চাপিয়ে বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে সরকারের দায়িত্ব কী? টিএমসি-র সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই অপরাধ করছে, তাই তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।” তিনি অভিযুক্তদের জন্য কঠোর শাস্তির দাবি জানান এবং বলেন, “এই ধরনের অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত।”
আরজি কর মামলার প্রেক্ষাপট
গত ৯ আগস্ট ২০২৪-এ আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ডাক্তার ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। তাঁর দেহ সেমিনার হলে পাওয়া যায়। কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়, এবং কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সিবিআই জানিয়েছে, (Abhaya) এটি গণধর্ষণ নয়, এবং সঞ্জয় রায়ই একমাত্র অভিযুক্ত। তবে, অভয়ার বাবা সিবিআই-এর তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “তারা জানে আরও কারা জড়িত, কিন্তু তথ্য গোপন করছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ের মোবাইল নম্বর মৃত্যুর পর কয়েক মাস ব্যবহৃত হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার (Abhaya) এই ঘটনাকে উল্লেখ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে বাংলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়েরা নিরাপদ নয়।” তিনি আরজি কর মামলার প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ করেন।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই ঘটনার বিরুদ্ধে বড় আন্দোলন হবে।” টিএমসি নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত মন্তব্য, “কলেজের ভিতরে এমন ঘটনায় পুলিশ কী করবে?” জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। টিএমসি দাবি করেছে, তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করেছে এবং ভুক্তভোগীকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।
জনগণের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ
কসবা ঘটনা এবং আরজি কর মামলার পর জনগণের মধ্যে নারী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলো কলেজে সিসিটিভি, নিরাপত্তারক্ষী এবং কঠোর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তদন্ত শুরু করেছে এবং কলকাতা পুলিশকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
নতুন কর নোটিশে বিমা খাতে জিএসটি কর্তৃপক্ষের কড়া বার্তা
পুলিশ কমিশনারের ভূমিকা
কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা কলেজ পরিদর্শন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন এবং তদন্তে দ্রুত অগ্রগতির আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষকে সিসিটিভি এবং নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, অভয়ার বাবা বলেন, “শুধু গ্রেফতার নয়, এই ধরনের ঘটনা রোধে সরকারকে বড় পদক্ষেপ নিতে হবে।”
কসবা গণধর্ষণ (Abhaya) কাণ্ড এবং অভয়ার বাবার বক্তব্য রাজ্যে নারী নিরাপত্তার সংকটকে আরও প্রকট করেছে। আরজি কর মামলার ১০ মাসের মধ্যে এই ঘটনা সরকারের ব্যর্থতা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার অভাব তুলে ধরেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার সত্ত্বেও, জনগণের প্রতিবাদ এবং ন্যায়বিচারের দাবি অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের ফলাফল এবং সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ এই মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।