বারুইপুর: দিনের আলোতেই ঘটে গেল এক লোমহর্ষক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে এক ৬৫ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকা জুড়ে। অভিযোগ, বাড়িতে একা পেয়ে এক দুষ্কৃতী প্রথমে লুটপাট চালাতে ঢোকে এবং বাধা পেয়ে সেই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ (Rape) করে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, যখন ওই বৃদ্ধার স্বামী প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। ছেলেও স্ত্রীসহ বাইরে ছিলেন। ফলে বাড়ির নিচতলায় একাই ছিলেন বৃদ্ধা। ঠিক সেই সময় একটি দুষ্কৃতী খোলা দরজা দিয়ে ঢুকে পড়ে। প্রথমেই সে বৃদ্ধার কাছে আলমারির চাবি দাবি করে। বৃদ্ধা রাজি না হলে, তাকে মারধর শুরু করে ওই দুষ্কৃতী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধার স্বামী প্রতিদিনের মতোই সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সেই সুযোগেই খোলা দরজা দিয়ে এক অচেনা ব্যক্তি বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে। সে সোজা গিয়ে বৃদ্ধার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে। প্রথমে স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাই, এরপর ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো এবং শেষে শারীরিক নিগ্রহ ও ধর্ষণের (Rape) ঘটনা ঘটায় সে। বৃদ্ধার গলার সোনার হার, আংটি ও বালা লুঠ করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতী।
ঘটনার পর বৃদ্ধাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে তাঁর শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।
এই ঘটনায় বারুইপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, এটি পরিকল্পিত লুটপাটের চেষ্টা হতে পারে, যা ভয়াবহ ধর্ষণের ঘটনায় রূপ নেয়। বৃদ্ধার মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মামলা পকসো এবং ধর্ষণের ধারা যুক্ত করে এগনো হবে।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, দিনের আলোয় কীভাবে একজন দুষ্কৃতী একটি বাড়িতে অনায়াসে ঢুকে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটাতে পারে? তাঁদের দাবি, এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কড়াকড়ি করতে হবে এবং দুষ্কৃতীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
বারুইপুর থানার এক আধিকারিক বলেন, “এটা একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং দুঃখজনক ঘটনা। আমরা দ্রুত দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে, বাড়িতে একা থাকা প্রবীণদের নিরাপত্তা কতটা সুনিশ্চিত? নারীদের প্রতি চলতে থাকা অপরাধ রুখতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপই এখন সময়ের দাবি বৃদ্ধার পরিবার জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার শেষ না দেখা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে এবং অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।