উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড়ে (Titagarh) একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। পোস্ট অফিসের (Post Office) লেটার বক্সে (Letter Box) ৫৫ (55) টি পাসপোর্ট (Passports) উদ্ধার হয়েছে, যা সিলবিহীন ছিল। এই ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনা গোয়েন্দাদের মধ্যে বাড়িয়ে দিয়েছে উদ্বেগ, কারণ এটি জাল পাসপোর্ট চক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ থেকে দুজনকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে আরও বেশ কিছু অন্ধকার দিক প্রকাশ পেতে পারে।
টিটাগড় (Titagarh) পোস্ট অফিসের (Post Office)বাইরে একটি লেটার বক্সে পাসপোর্টগুলো পাওয়া গেছে। সাধারণত এই বাক্সে মানুষ চিঠিপত্র ও অন্যান্য নথি পাঠানোর জন্য রেখে দেন। কয়েকদিন আগে লেটার বক্স খুললে একটি বড় খাম পাওয়া যায়, যার একদিক ছেঁড়া ছিল। খামের ভেতর ছিল ৫৫টি পাসপোর্ট, যা দেখে হতবাক হন পোস্ট অফিসের কর্মীরা। তৎক্ষণাৎ পোস্টমাস্টারকে জানানো হলে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান এবং পরে গোটা ঘটনা খড়দহ থানায় জানানো হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় শোরগোল পড়ে যায় এবং প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, এই পাসপোর্টগুলির সঙ্গে কি কোনও জাল চক্রের সম্পর্ক রয়েছে? পাসপোর্টগুলো সিলবিহীন হওয়ায় গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন, এগুলো জাল পাসপোর্ট হতে পারে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের সম্পর্কেও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হতে পারে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পাসপোর্টগুলির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি এখনও সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়নি, তবে প্রাথমিক তদন্তে এসব পাসপোর্টকে জাল বলে মনে হচ্ছে না। তবে তদন্তের গতিপথ অনুসারে এটি একটি বড় চক্রের অংশ হতে পারে, যার মধ্যে বিভিন্ন স্তরের মানুষ জড়িত থাকতে পারেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। পোস্ট অফিসের কর্মীরা কি এতে জড়িত? অথবা বাইরে থেকে কেউ এই পাসপোর্টগুলো লেটার বক্সে রেখে গেছে? পুলিশ এবং গোয়েন্দারা টিটাগড় (Titagarh) এলাকায় সব দিক খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি, গোয়েন্দারা আরও জানতে চাচ্ছেন, এসব পাসপোর্ট কোথ থেকে এসেছে এবং এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও চক্রের সম্পর্ক রয়েছে কি না।
এছাড়া, প্রশাসনিক স্তরে এই ঘটনায় তৎপরতা শুরু হয়েছে। টিটাগড় পোস্ট অফিস এবং আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দ্রবদন ঝাঁ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে উদ্ধার হওয়া পাসপোর্টগুলো জাল বলে মনে হচ্ছে না, তবে তদন্ত চলছে। এই পাসপোর্টগুলো কীভাবে লেটার বক্সে পৌঁছেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলেছেন যে, এই পাসপোর্টগুলির সঙ্গে আরও তদন্ত করা হবে এবং দ্রুত এর পেছনে কে বা কারা রয়েছে, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হবে। এমনকি, টিটাগড়ের মতো এলাকাতেও জাল পাসপোর্ট চক্র সক্রিয় থাকার সম্ভাবনা অস্বীকার করা যাচ্ছে না।
এত বড় একটি ঘটনা সামনে আসার পর, স্থানীয় মানুষও উদ্বিগ্ন। তাদের ধারণা, এই চক্রের পেছনে কোনও বৃহৎ আন্তর্জাতিক চক্রান্ত থাকতে পারে। তাই পুলিশের উপর বড় দায়িত্ব বর্তেছে এই চক্রটির গতি রোধ করার জন্য। একই সঙ্গে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করার জন্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
এভাবে একের পর এক ঘটনাবলীতে রাজ্যজুড়ে জাল পাসপোর্ট চক্রের কার্যক্রম ধরা পড়ছে, যা নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ তৈরি করছে। পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের কাজ এখন আরও কঠিন হয়ে উঠেছে, কারণ এই চক্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা উত্থাপিত হয়েছে।