কালীগঞ্জে কাণ্ডে গ্রেফতার ৪, ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

নদিয়া: নদিয়ার কালীগঞ্জে (Kaliganj Incident) ভোটের ফল প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রাজনৈতিক হিংসার বলি হয় এক নিরীহ নাবালিকা। স্থানীয় সূত্রে জানা…

কালীগঞ্জে কাণ্ডে গ্রেফতার ৪, ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

নদিয়া: নদিয়ার কালীগঞ্জে (Kaliganj Incident) ভোটের ফল প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রাজনৈতিক হিংসার বলি হয় এক নিরীহ নাবালিকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার তৃণমূলের বিজয়োল্লাস চলাকালীন আচমকা বোমা ছোড়া হয়। সেই বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যু হয় এক কিশোরীর। ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। গোটা রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার বিষাক্ত ছায়া ফের ফিরে এল।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, শুধুমাত্র বিরোধী দলের সমর্থক হওয়ার কারণে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা বাড়িতে বোমাবাজি করে এবং সেই সময় এক বোমা বিস্ফোরণে মেয়েটির প্রাণ যায়।

   

মৃত্যুর খবর পেয়ে ওড়িশা থেকে ট্রেনে করে সোমবার রাতেই রওনা দেন নিহত কিশোরীর বাবা। মঙ্গলবার সকালে কালীগঞ্জে পৌঁছে তিনি জানান, “বিরোধী রাজনীতি করি বলেই বারবার হামলা হয়েছে। এখন মেয়েকে হারালাম। পুলিশের উপর আমার কোনও ভরসা নেই। তবে আমি আদালতের দ্বারস্থ হব, যতদূর যেতে হয় যাব।”

নিহতের পরিবারের তরফে কালীগঞ্জ থানায় ২৪ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আনোয়ার শেখ, মনোয়ার শেখ, আদর শেখ এবং কালু শেখ নামে চারজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বাকিদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি চলছে। ধৃতদের বাড়ির আশেপাশের এলাকায় চলে ব্যাপক পুলিশি তল্লাশি। বাঁশবাগান, পাটক্ষেত— সর্বত্র খোঁজ চলছে বোমা বা বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়েছে কি না।

Advertisements

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে তীব্র নিন্দা করেছেন। পুলিশ ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করছে। কাল রাত পর্যন্ত চারজন গ্রেফতার হয়েছে। এরা কোন দলের সেটা বড় কথা নয়, যারা এমন কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ হওয়া উচিত।”

রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তরজা। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, ভোটে হার মেনে নিতে না পেরে শাসক দলের কর্মীরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছে, আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, দোষীদের দলীয় পরিচয়ে রক্ষা করা হবে না।

স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে। রাজনৈতিক হিংসা ও বোমাবাজি যে আবার নতুন করে বাংলার মাটিকে রক্তাক্ত করছে, সেই ছবি ফের সামনে এসেছে নদিয়ার কালীগঞ্জ থেকে।