কলকাতা: চলতি মাসেই দুর্গাপুরের ডাক্তারি পড়ুয়ার গণধর্ষণের পর হাওরার উলুবেরিয়ার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে ‘ধর্ষণের হুমকি’-র (Rape Threat) ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। শাসক-বিরোধী তর্জমার মাঝে বুধবার ঘটনায় ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
তিন অভিযুক্ত হলেন শেখ সম্রাট, ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে কর্মরত হোমগার্ড শেখ বাবুলাল এবং শেখ হাসিবুল। হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয়রা সোমবার বিকেলে মহিলা চিকিৎসককে মারধোর করা এবং ধর্ষণের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর রাজ্যের চিকিৎসকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন জয়েন্ট ফোরাম অফ ডক্টরস উলুবেড়িয়া হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং কর্তব্যরত ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল
ঘটনার জেরে শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি (BJP)। আর জি করের (R G Kar) মত নৃশংস ঘটনার পরেও রাজ্যের প্রশাসন নিরুত্তাপ, বলে মমতার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya)।
তিনি বলেন, “তৃণমূল এমন এক অস্থির সমাজ তৈরি করেছে যেখানে বিকৃত হোমগার্ড এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা দলের অংশ। তারা বিশ্বাস করে যে এটি তাদেরই সরকার। তারা পুলিশ বা প্রশাসনের কোনও পরোয়া করে না। কোনও সিসিটিভি নজরদারি নেই। এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।”
তৃণমূলের শাসনকালে বাংলার মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। এক্সে তিনি লিখেছিলেন, “আর জি কর মেডিকেল কলেজ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর, মুখ্যমন্ত্রীর আস্ফালন এবং ভুয়ো প্রতিশ্রুতির মুখোশ খুলে গিয়েছে। যার সাম্প্রতিক প্রমাণ হল হাওড়ার উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সরকারি মেডিকেল কলেজের মর্মান্তিক ঘটনা। একজন মহিলা ডাক্তারকে হাসপাতালের ভেতরে একজন হোমগার্ড হেনস্থা করেন এমনকি ধর্ষণের হুমকি দেয়! সেই সময় কোনও নিরাপত্তা কর্মী উপস্থিত ছিলেন না, বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই মহিলা চিকিৎসক। তিনি এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।”
অন্যদিকে ঘটনার “তীব্র নিন্দা” জানিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র অরুণ চক্রবর্তী (Arun Chakraborty) বলেন, “সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” কিন্তু নন্দীগ্রামে ধর্ষণের মামলায় যখন তার দলের একজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন কেন (বিজেপি নেতা) শুভেন্দু অধিকারী চুপ ছিলেন?” বলে পাল্টা আক্রমণ করেন অরুণ চক্রবর্তী।