১২০ কোটি টাকার দুর্নীতি, দল থেকে বহিস্কৃত মালবাজার পুরসভার প্রধান

আরজি কর কাণ্ডের জন্য অনেকদিন ধরেই বেশ চাপে রয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে এই ঘটনার আগে গত কয়েক বছর ধরে তৃণমূলের একের পর এক দুর্নীতি সামনে এসেছে। আর এর জন্য জেলও খেটেছে দোর্দণ্ডপ্রতাপ অনেক নেতা। কিন্তু এবার রাজ্যে দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে একেবারে অ্যাকশন মোডে নেমে পড়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

Advertisements

আর তাই কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে এবার দল থেকে বহিষ্কৃত হলেন জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার (Malbazar) পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান স্বপন সাহা। জানা যাচ্ছে, অনির্দিষ্ট কালের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁকে। ঠিক কী হয়েছিল? তৃণমূলের অন্দরে অনেকদিন ধরেই স্বপন সাহার বিরুদ্ধে বিভিন্নরকম অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল।

টাকা নিয়ে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া, বাজারে দোকান বণ্টন, আবাস যোজনার টাকা তছরুপ ও অবৈধ নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়ার মতো একাধিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এমনকি তিনি ১২০ কোটিরও বেশি টাকার আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপরে শেষমেশ মঙ্গলবার স্বপন সাহাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান দলের ওপর ক্ষোভ উগড়ে বলেছেন, “যে দুর্নীতির কথা বলছেন, সেই দুর্নীতি প্রমাণ করে দেখান। আমার দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। প্রয়োজনে পাসবই খতিয়ে দেখা হোক কোন অ্যাকাউন্টে টাকা রয়েছে। ষড়যন্ত্র করে আমায় ফাঁসানো হল। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে দলে কাজ করেছি। এখন যদি এভাবে চলে যেতে হয়, দুঃখের বিষয়। তবে দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভালই করেছে।”

Advertisements

অন্যদিকে স্বপন সাহার দল থেকে বহিস্কার হওয়া নিয়ে মুখ খুলেছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের অন্যতম সদস্যা মহুয়া গোপ। তাঁর কথায়, “একদিকে গত লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফল, তার উপর স্বপনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে দুর্নীতির নানা অভিযোগ দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছেছে। সেইসব দিক বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত।

যাঁরা যাঁরা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবেন, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবেন, তাঁদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না।” এদিকে স্বপন সাহাকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।