মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে (Medinipur medical mishap) প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দেন যে, এই ঘটনায় হাসপাতালের সুপার-সহ মোট ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যদপ্তর এবং সিআইডির যৌথ তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে এই চিকিৎসকদের (Medinipur medical mishap) গাফিলতি প্রমাণিত হয়েছে। সাসপেন্ড হওয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্ত চলবে এবং বিষয়টি শিগগিরই আরও খতিয়ে দেখা হবে।
সাসপেন্ড হওয়া চিকিৎসকদের মধ্যে রয়েছেন—ডা. সৌমেন দাস (আরএমও), ডা. দিলীপ পাল (বেড ইনচার্জ), ডা. হিমাদ্রি নায়েক (সিনিয়র ডাক্তার), ডা. মহম্মদ আলাউদ্দিন (বিভাগীয় প্রধান), ডা. জয়ন্তকুমার রাউত (এমএসভিপি), ডা. পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায় (সিনিয়র রেসিডেন্ট), ডা. মৌমিতা মণ্ডল (পিজিটি পড়ুয়া), ডা. ভাগ্যশ্রী (পিজিটি পড়ুয়া), ডা. সুশান্ত মণ্ডল (পিজিটি পড়ুয়া), ডা. পূজা সাহা (পিজিটি পড়ুয়া), ডা. মণীশ কুমার (পিজিটি পড়ুয়া), এবং ডা. জাগৃতি ঘোষ (পিজিটি পড়ুয়া)।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “যাঁদের হাতে মানুষের জীবন-মরণ নির্ভর করে, তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা উচিত। যদি তাঁরা সঠিকভাবে কাজ করতেন, তাহলে মা এবং শিশুর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হত।” তিনি আরও যোগ করেন, “এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সিনিয়র চিকিৎসকরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করবেন, নতুবা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী একে একে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “এতগুলো ডাক্তার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি, এই ঘটনায় কোনো সন্দেহ নেই। অনেক সিনিয়র চিকিৎসককেই ডিউটি শেষ হওয়ার পর প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে দেখা যায়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।” তিনি সিনিয়র চিকিৎসকদের আরও অনুরোধ করেন, “যখন কোনো ট্রেনিং চিকিৎসক রোগী দেখতে যাবেন, তখন সিনিয়র চিকিৎসকরা তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।”
এছাড়া, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “সব অপারেশন থিয়েটারের বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি ভবিষ্যতে গাফিলতি ঠেকাতে সহায়ক হবে।” তিনি বলেন, “যদি কেউ এই নির্দেশে আপত্তি করে, তবে তাকে বলুন, সে বাড়ি গিয়ে বসে থাকুক অথবা অন্য কোথাও কাজ খুঁজে নিক।”
রাজ্য সরকারের এ পদক্ষেপের পরবর্তী সময়ে যদি আরও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।