মিলন পণ্ডা, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের কুমিরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ খড়িপুকুরিয়া অঞ্চলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আয়োজিত “আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান” কর্মসূচিকে ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেসে নতুন রাজনৈতিক হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এই কর্মসূচির মধ্যেই সিপিএম (CPM) থেকে ১০টি পরিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান (Join TMC) করলেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন রাজ্য আইএনটিইউসি সম্পাদক তথা কাঁথি ৩ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র বেজ।
এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় স্তরে বাসিন্দাদের সমস্যার সরাসরি সমাধান করা। এই কারণে অঞ্চলজুড়ে প্রচার চালিয়ে, বসবাসকারীদের অভিযোগ ও চাহিদা শুনে সমাধানের পথ খুঁজতে উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ধরনের কর্মসূচি রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে, যার প্রভাব ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক ময়দানে অনুভূত হচ্ছে বলে দাবি শাসক দলের নেতাদের।
বিকাশ চন্দ্র বেজ বলেন, “মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন নীতি ও কর্মসূচিতে আস্থা রেখেই আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য মানুষকে দ্রুত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া এবং তাঁদের সমস্যার বাস্তব সমাধান করা।”
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রাজকুমার দাস, স্থানীয় তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকেরা। সিপিএম থেকে সদ্য তৃণমূলে যোগদানকারী এক ব্যক্তি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন যাত্রায় শামিল হওয়ার জন্যই আমরা তৃণমূলে এলাম। আমরা বিশ্বাস করি ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বহু সমস্যা দ্রুত মিটবে।”
এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাঁথির মতো এলাকায় সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগদান মানে শুধু প্রতীকী পরিবর্তন নয়, এটি তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনগত ভিত্তিকে আরও মজবুত করার ইঙ্গিত বহন করে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজের গড়ে এমন ঘটনা তৃণমূলের পক্ষেই বার্তা বহন করছে বলে তাদের বক্তব্য।
তবে সিপিএম এই যোগদানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। স্থানীয় সিপিএম নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, “তৃণমূল নতুন নাটক শুরু করেছে। সিপিএম থেকে কেউ যোগদান করেছে, এই দাবি ভিত্তিহীন। শিরোনামে আসতেই এইসব নাটক করছে শাসক দল।”
অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, কাঁথি-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে এই কর্মসূচির মাধ্যমে দলের সঙ্গে সরাসরি মানুষের সংযোগ গড়ে উঠছে, যা ভোট রাজনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তাদের আশাবাদ।
মোটের উপর, “আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান” কর্মসূচি শুধু এক প্রশাসনিক উদ্যোগ নয়, এটি তৃণমূল কংগ্রেসের জনসংযোগের কৌশল, যা বিরোধীদের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।