মেয়ো রোডে ছাত্র-যুবদের ঢল, সভামঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখেই ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যে। আর সেই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার কলকাতার ঐতিহাসিক মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের…

Youth Turnout Floods Mayo Road as Abhishek Banerjee Takes Stage

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখেই ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্যে। আর সেই প্রেক্ষাপটেই বৃহস্পতিবার কলকাতার ঐতিহাসিক মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে এক মেগা সভার। সকাল থেকেই সভা ঘিরে তৃণমূল সমর্থক ও কর্মীদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ছাত্র-যুব কর্মী সকাল থেকেই ঢল নামিয়েছেন সভাস্থলে।

অভিষেকের উপস্থিতিতে উচ্ছ্বাস

   

এদিনের সভায় সবচেয়ে আগে এসে পৌঁছান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আগমন ঘিরে ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। সভামঞ্চে উঠে অভিষেক হাত নেড়ে অভিবাদন জানাতেই গোটা মাঠে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে দলীয় স্লোগান। অভিষেকের উপস্থিতিতে কার্যত জমজমাট হয়ে ওঠে সভার পরিবেশ।

মমতার ভাষণের অপেক্ষায়

তবে সভার মূল আকর্ষণ নিঃসন্দেহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি এদিন বিকেলে সভায় যোগ দেবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দেবেন। ২০২৬ সালের ভোটের আগে এই সভামঞ্চ থেকেই তিনি বিরোধীদের কড়া আক্রমণ শানাতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। পাশাপাশি ছাত্র-যুবদের জন্য নতুন দিকনির্দেশনা এবং রাজ্যের উন্নয়নের কর্মপরিকল্পনা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করতে পারেন দলনেত্রী।

ঐতিহাসিক তাৎপর্য

তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রাজ্যের ছাত্র-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতি বছরই এই দিনটি ছাত্র পরিষদ বিশেষ উৎসাহের সঙ্গে পালন করে। কিন্তু এ বছর রাজনৈতিকভাবে এর তাৎপর্য অনেক বেশি। কারণ ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এই সভা কার্যত তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শনের জায়গা হয়ে উঠেছে। বিশেষত বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস জোট যখন সংগঠন গঠনে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন তৃণমূল এই সভার মাধ্যমে যুব সমাজের প্রতি নিজেদের প্রভাব দেখাতে চাইছে।

Advertisements

সভামঞ্চে শক্তি প্রদর্শন

সকাল থেকেই মেয়ো রোডের আশপাশের এলাকা কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা ও ব্যানার। মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আঁকা ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা সভা এলাকা। নিরাপত্তার ব্যবস্থাও ছিল কড়া। কলকাতা পুলিশের তরফে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। একাধিক জায়গায় বসানো হয়েছে চেকিং পয়েন্ট।

রাজনৈতিক বার্তা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এদিনের সভা থেকে তৃণমূল এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছে। একদিকে ছাত্র-যুবদের উজ্জীবিত করা, অন্যদিকে বিরোধীদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যে বাংলার মাটিতে এখনও তৃণমূলের জনভিত্তি অটুট। মমতার ভাষণের মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে পারেন এবং রাজ্যের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরতে পারেন।

আগামীর লড়াই

২০২৬ সালের ভোটের আগে এমন এক সময়ে এই সভা হচ্ছে, যখন বাংলার রাজনৈতিক আবহাওয়া ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। বিরোধীরা নানা ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূলও বারবার শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতে চাইছে যে রাজ্যে তাদের প্রভাব এখনও অটুট। তাই এই সভা নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং আগামী ভোটের লড়াইয়ের আগে রাজনৈতিক রণকৌশলেরই এক বড় মঞ্চ।