Ukraine War: কিয়েভের কাছেই গণকবর, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ফের গণহত্যার অভিযোগ

গোটা দুনিয়ার কাছে এখন একটাই প্রশ্ন, সেটা হল ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার এই আগ্রাসন (Ukraine War) থামবে কবে? গত মাসে তুরস্কের ইস্তানবুলে হওয়া চতুর্থ দফার শান্তি…

Mass grave near Kiev

গোটা দুনিয়ার কাছে এখন একটাই প্রশ্ন, সেটা হল ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার এই আগ্রাসন (Ukraine War) থামবে কবে? গত মাসে তুরস্কের ইস্তানবুলে হওয়া চতুর্থ দফার শান্তি বৈঠকে রাশিয়া সামরিক অভিযান কমানোর আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে সামরিক অভিযান কমা তো দূরের কথা, বরং ক্রমশই সামনে আসছে রুশ সেনার একের পর এক নৃশংসতার ছবি।

বুচা শহরে গণহত্যার ছবি দেখে গোটা বিশ্ব শিউরে উঠেছে। এবার কিয়েভের কাছাকাছি বুজোভা গ্রামেও হদিশ মিলল গণকবরের। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, বুজোভা গ্রাম থেকে এখনো পর্যন্ত ৯০০ দেহ উদ্ধার হয়েছে।

   

ইউক্রেনীয় পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের বেশিরভাগই রাশিয়ার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, নৃশংসতার বলি হয়েছেন এই নিরীহ সাধারণ মানুষগুলি। বুজোভা গ্রামের কাছেই একটি পেট্রোল পাম্পের পিছনদিকে গর্ত কেটে রাখা হয়েছিল সারি সারি মৃতদেহ।

ইউক্রেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, রুশ সেনা শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেই তাদের এই তাণ্ডবলীলার কথা সামনে আসে। ইউক্রেন একাধিকবার অভিযোগ করেছে, রুশ সেনা অকারণেই সাধারণ জনবসতির উপর হামলা চালাচ্ছে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য হল নিরীহ মানুষকে হত্যা করা, তাদের সম্পদ ধ্বংস করা।

এদিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে জানিয়েছেন, এপর্যন্ত রুশ হামলায় তিন হাজারেরও বেশি সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০-১২ হাজার। তবে কতজন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি জেলেনস্কি। ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, রুশ যুদ্ধজাহাজ মোস্কভা ধ্বংস হওয়ার কারণে রাশিয়ার পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে।

জেলেনস্কি যে পরিমাণ সেনা হতাহতের খবর বলেছেন তা মানতে রাজি নয় বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি, রাশিয়ার হামলায় ২০ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। বহু জায়গাতেই সেনা পোশাক ছেড়ে রেখে সাধারণ মানুষের পোশাকে রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনা।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে জেলেনস্কি পারমাণবিক হামলার যে কথা বলেছেন তা নিতান্তই অমূলক নয় তার প্রমাণও মিলেছে। রাশিয়ার সরকারি প্রচারমাধ্যমের সঞ্চালক ওল্গা স্কাবিয়েভা বলেছেন, এবার শুরু হতে চলেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ইউক্রেন যেভাবে আমাদের যুদ্ধজাহাজ মোস্কভা ধ্বংস করে দিয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। তাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধই একমাত্র পথ। যদিও রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছিল, অগ্নিকাণ্ডের কারণেই তাদের এই যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়েছে।

স্কাবিয়েভা আরও বলেন, আমেরিকা ও ন্যাটো ইউক্রেনকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে। ইউক্রেনকে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সব ধরনের মদত দিচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। কূটনৈতিক মহলের আশঙ্কা, ৫০ দিনেরও বেশি যুদ্ধ চালিয়ে ইউক্রেন জয় করতে না পেরে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাশিয়া। দেশের সরকারি প্রচার মাধ্যমে সেকথা স্বীকার করা হয়েছে।

এবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকেও ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ বলে ঘোষণা করল রুশ বিদেশমন্ত্রক। রাশিয়ার অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের এই তালিকা ক্রমশই লম্বা হচ্ছে। এর আগে মস্কো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অ্যাডার্নকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছিল।

শুধু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নন, ব্রিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ডোমিনিক রাব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেন ওয়ালস, বিদেশ মন্ত্রী লিজা ট্রুস-সহ আরও কয়েকজন শীর্ষ সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধেও রাশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মস্কো।