বাংলাভাষীদের উপর ক্রমবর্ধমান “অত্যাচার” এবং এসআইআর (Special Summary Revision)–এর মাধ্যমে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী ভোটারদের “টার্গেট” করে যে ষড়যন্ত্র চলছে, তার বিরুদ্ধে এবার বড় আন্দোলনের পথে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই প্রেক্ষিতেই আগামী ৮ অগাস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টেয় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এক গুরুত্বপূর্ণ ভার্চুয়াল বৈঠক ডাকলেন (Mega Virtual Meeting)।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন—
সংসদ সদস্য, বিধায়ক, কাউন্সিলর
রাজ্যসভার সদস্যরা
পৌরসভার মেয়র, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান
রাজ্য ও জেলা স্তরের সংগঠনের সভাপতি ও চেয়ারম্যান
কলকাতা পুরসভার সকল সভার প্রতিনিধি এবং ওয়ার্ড স্তরের মাদার প্রেসিডেন্টরা
বৈঠকের আগে বিকেল ৩টে নাগাদ সকল আমন্ত্রিতের কাছে পাঠানো হবে লিঙ্ক, যাতে তাঁরা নির্ধারিত সময়ে যুক্ত হতে পারেন। একুশে জুলাইয়ের পর এই প্রথম এত বড় মাপের দলীয় বৈঠক করছেন অভিষেক, ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক থেকে বড় কোনও ঘোষণা বা বার্তা আসতে পারে।
এসআইআরের (Special Summary Revision) মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্যান্য রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে “বিদেশি” দেখিয়ে ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম কাটা হচ্ছে। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই দলীয়ভাবে বড় আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করছে তৃণমূল।
এ প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতা বলেন, “বিজেপি বুঝে গিয়েছে, গণতান্ত্রিক উপায়ে বাংলায় ওরা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই এখন ভোটার তালিকাই পাল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রকে আমরা রুখে দেবই।”
এই ইস্যুকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সাংসদরা সংসদে ধর্না-বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও ব্লকে দলীয় কর্মসূচি চলছে। এবারে আরও সংগঠিতভাবে এবং পরিকল্পিত পথে আন্দোলনের জন্যই ৮ অগাস্টের ভার্চুয়াল বৈঠক।
তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলা ভাষা এবং বাংলার মানুষদের অস্তিত্ব রক্ষা করাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি। দল মনে করছে, সারা দেশে যে ভাবে বাংলাভাষীদের কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে, তা গণতন্ত্রের উপরই সরাসরি আঘাত।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মিছিল, সব স্তরে সাড়া ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। দলের একাংশ মনে করছে, এই আন্দোলনের মাধ্যমেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং তার আগের লড়াইয়ের মাটি তৈরি করবে তারা।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৮ অগাস্ট কী বার্তা দেন, তা এখন দেখার বিষয়। সেই অনুযায়ী রাজ্য থেকে দিল্লি পর্যন্ত পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে ঘাসফুল শিবির।