পায়ে কাঁটা ফুটেছে বলে তৃণমূলকে কটাক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর

BJP leader Suvendu Adhikari criticized Trinamool Congress at a cultural event in Kathi, urging protection for Booth Level Officers (BLOs) and stressing election integrity amid heated political debate in West Bengal.

মিলন পণ্ডা, কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর): রাজ্যব্যাপী বিরোধী রাজনৈতিক উত্তাপের আবহে শনিবার কাঁথির মির্জাপুর বাজারে অনুষ্ঠিত শ্যামা পূজো সংক্রান্ত সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “পায়ের কাঁটা ফুটেছে, তাই তারা ঘেউ ঘেউ করছে,” — মন্তব্য করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচনী নিরাপত্তা নিয়েও পুনরায় জোর দেন তিনি।

Advertisements

শুভেন্দু বলেন, ইলেকশন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোট প্রক্রিয়ার সকল স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি এদিন বিএলও (Booth Level Officer) কর্মীদের সম্মান ও সুরক্ষা সম্পর্কেও আশ্বস্ত করেন এবং দলে-ধর্মে বিভক্ত না হয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানান। “যদি কোনও বিএলও আক্রান্ত হন, তাহলে তাঁরা নির্দ্বিধায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন — আমি তাদের পাশে থাকতে প্রস্তুত,” বলেছেন শুভেন্দু।

   

তাঁর বক্তব্যের একাংশে তিনি বিহারের ঘটনাকেও উল্লেখ করেন — যেখানে আগে বিএলওদের অবৈধ কাজের অভিযোগে ৫২ জন জেল শাস্তি পেয়েছেন বলে তিনি স্মরণ করান। তিনি বলেন, “আমি শুধু স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছি যাতে এখানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।” পাশাপাশি হিংসা, জাল ভোট ও অনুপ্রবেশের মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপের সওয়ালও করেন তিনি।

শুভেন্দু আরও বলেন, এসআইআর (SIR) বা ভোটার তালিকা সনদ সংশোধন কার্যক্রম নতুন নয়—স্বাধীনতার পর একাধিকবার এধরনের প্রক্রিয়া হয়েছে। তিনি একযোগে বলেন, “ভারতীয় মুসলমানদের কোনও সমস্যা নেই; মিথ্যা বা জাল নথি যদি বাদ পড়ে, তা উদ্যোগ দেশের সুরক্ষার জন্য করা হচ্ছে।” এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকদের তাড়ানোর মতো কড়া ভাষায় মন্তব্যও করেন, যা স্থানীয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন উত্তেজনার সূত্রপাত করেছে।

Advertisements

স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশে শুভেন্দুর মন্তব্যকে ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তৃণমূল শিবির থেকে কিছু রাজনৈতিক কর্মী ও স্থানীয় নেতা তার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে, জেলা ও ব্লক–স্তরের কিছু সমর্থক শুভেন্দুর বক্তব্যকে নির্বাচনী তৎপরতা ও জননিরাপত্তার দাবি হিসেবে দেখছেন।

নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট সময়কালে এই ধরনের উষ্ণ রাজনৈতিক বিবৃতি স্বাভাবিক; তা রাজনৈতিক কৌশল ও জনমত গড়ার অংশ। তবে তাঁদের পাশাপাশি সতর্ক করেন যে, কঠোর বা বিভাজনমূলক বক্তব্য সামাজিক সমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে—তাই রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন জরুরি।

স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত শুভেন্দুর বক্তব্য নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে প্রশাসন যদি মনে করে বক্তব্য অঞ্চলীয় আইন বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে, তখন প্রয়োজনীয় আইনগত রেসপন্স নেওয়া হবে বলে তারা জানিয়েছে।