এসএসসির (পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন) শিক্ষক নিয়োগ (SSC Recruitment) পরীক্ষার জন্য আবেদনের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। গতকাল ছিল আবেদনের শেষ দিন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এবার প্রায় ৫ লাখ ৯০ হাজার চাকরিপ্রার্থী অনলাইনে আবেদন করেছেন। এই বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন আগের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি হারানো প্রার্থীরাও।
বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, যাঁরা বিগত কয়েক বছর ধরে এসএসসি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন—তাদের অনেক শীর্ষ নেতাও এবার নতুন করে আবেদন করেছেন। তাঁদের দাবি, বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখেই তাঁরা ফের পরীক্ষা দিয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে চান।
সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশের পরেই দ্রুত গতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে কমিশন। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৭ ও ১৪ তারিখ এসএসসি’র শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
৭ সেপ্টেম্বর: নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা
১৪ সেপ্টেম্বর: একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা
এই দুই তারিখেই ৬০ নম্বরের একটি লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। সময়সীমা ও সিলেবাস নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা আজ (২২ জুলাই) বা আগামীকাল প্রকাশিত হতে পারে বলে কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।
যেহেতু দুর্গাপুজো অক্টোবরের শুরুতেই, তাই চেষ্টা করা হচ্ছে পুজোর আগেই নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। এতে যেমন কমিশনের দায়বদ্ধতা থাকে, তেমনই বহু দিন ধরে অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীদের জন্যও এটি বড় খবর।
এদিকে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। কোচিং সেন্টারগুলিতেও ভিড় বাড়ছে। পূর্ববর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে যে ধরণের দুর্নীতি, অনিয়ম ও মামলার জট তৈরি হয়েছিল—তা যাতে এবার আর না হয়, তার জন্য প্রার্থীরা স্বচ্ছ, ডিজিটাল ও কঠোর নজরদারির মাধ্যমে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন।
চাকরি হারানো প্রার্থীরা বারবার দাবি করেছেন, তাঁরা আগে একবার যোগ্যতা প্রমাণ করেছিলেন, এবারও করতে পারবেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন, “আমরা চাই আইন মেনে, স্বচ্ছভাবে ফের পরীক্ষা দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেতে।”
যেহেতু আন্দোলনের নেতারাও এবার পরীক্ষায় বসছেন, তাই এই নিয়োগ পর্ব ঘিরে আবারও নজর থাকবে শিক্ষা মহল ও প্রশাসনের। তবে প্রশাসনের দাবি, এবারে নিয়োগ পদ্ধতিকে একেবারে ‘জিরো টলারেন্স’-এর মধ্যে রেখে স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করা হবে।
সবমিলিয়ে বলা যায়, এসএসসি নিয়োগ নিয়ে রাজ্যে ফের বড়সড় উত্তাপ তৈরি হতে চলেছে। তবে প্রশাসনের তরফে এবার প্রস্তুতি অনেকটাই নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে হচ্ছে, যা চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে আশার আলো জাগাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, কতটা স্বচ্ছভাবে এবং দ্রুত গতিতে নিয়োগের পথে এগোতে পারে এসএসসি।