দিল্লির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা লালকেল্লা গত পাঁচ দিন ধরে বন্ধ থাকা নিয়ে চূড়ান্ত উদ্বেগে ছিলেন পর্যটকরা, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এবং সাধারণ মানুষ। গত সোমবার ঘটে যাওয়া প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের পর থেকেই লালকেল্লা ও তার সংলগ্ন এলাকা নিরাপত্তার কারণে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই বিস্ফোরণ ঘটে লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের সামনে, যা দিল্লি মেট্রোর ভায়োলেট লাইনের অন্যতম ব্যস্ত প্রবেশপথ।
তবে পাঁচদিনের টানটান উত্তেজনার পর অবশেষে সুখবর দিয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI)। শনিবার ASI ঘোষণা করে যে আসন্ন রবিবার, ১৬ নভেম্বর থেকেই খুলে দেওয়া হবে দিল্লির ঐতিহাসিক রেড ফোর্ট বা লালকেল্লা। ASI-এর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। হাজারো দেশি-বিদেশি পর্যটক প্রতিদিন লালকেল্লা দর্শনে আসেন। কিন্তু বিস্ফোরণের ঘটনার পর প্রবেশ বন্ধ থাকায় অনেকেই ভ্রমণসূচি বাতিল করতে বাধ্য হন। ফলে পর্যটনখাতে ক্ষতির আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল।
এর পাশাপাশি ASI জানিয়েছে যে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনার পর লালকেল্লার ভেতরে এবং বাইরে সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ, শাসনকর্তা এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে চারপাশে কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। আগত দর্শনার্থীদের বিশেষ স্ক্যানিং, ব্যাগ চেকিং, মেটাল ডিটেক্টর সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নিরাপত্তা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রোটোকল আরও কঠোর হওয়ার ফলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, মেট্রো পরিষেবা ফেরত আনার উদ্যোগ হিসেবে শনিবার থেকেই লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের দুটি গেট পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও সমস্ত গেট এখনই খোলা হয়নি, তবুও দুটি গেট খোলার ফলে যাত্রীদের যাতায়াত অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। DMRC জানিয়েছে, তদন্তে যেসব অংশকে নিরাপদ বলে ঘোষণা করা হয়েছে, শুধুমাত্র সেগুলিই আপাতত চালু করা হয়েছে। বাকিগুলো বিস্তারিত তদন্তের পর ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া হবে।
লালকেল্লার আশপাশের দোকানি, পথব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা লালকেল্লা পুনরায় খোলায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানান, লালকেল্লার মতো একটি বড় পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকলে তাঁদের ব্যবসাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভিড় না থাকলে ওই এলাকায় অর্থনীতির গতি কমে যায়। ফলে রবিবার থেকে দর্শনার্থীরা ফিরলে আবারও সেই আগের পরিবেশ ফিরে আসবে বলে তারা আশাবাদী।


