প্রসেনজিৎ চৌধুরী: নিচে বহমান প্রমত্তা পদ্মা উপরে অজগরের মতো পড়ে থাকা বিরাট পদ্মা সেতু। রাত নামলে ঝিকিমিকি আলোয় জ্বলতে থাকা এই সেতু তৈরির কাজ স্পষ্ট বোঝা যায়। তখন পদ্মার জল থাকে কালো। বড় বড় ঢেউ পাড়ের পাশে গোঁত্তা মারে। দু একটা টাবুরে নৌকা এদিক ওদিক দোলে।
পদ্মার দুই পাড়ের ব্যবধান ৬.১৫ কিলোমিটার জুড়বে আলোচিত পদ্মা সেতু। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এক বাণিজ্যিক ও যাতায়াতের জন্য এই সেতু উদ্বোধনের প্রহর গুণছে বাংলাদেশ। ঢাকা থেকে পাওয়া খবর, আগামী ২৫ জুন সেতুর উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেতু তৈরির সময় থেকে বারবার সরকারপক্ষের দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেছিলেন এই সেতু শেখ হাসিনার নামেই হোক। একবাক্যে সেটি খণ্ডন করেন বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা। সেই সেতুর উদ্বোধন করবেন তিনি। বাংলাদেশের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ‘ওই দিন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’
বিতর্কের পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব
পদ্মা সেতু গড়তে গিয়ে বাংলাদেশ সরকার পড়েছিল বিতর্কে। এক পর্যায়ে বিশ্বব্যাংক এই সেতু রূপায়ণ থেকে সহযোগিতার হাত তুলে নেয়। বাংলাদেশ সরকার এরপর নিজ অর্থে পদ্মা সেতু রূপায়ণের কথা ঘোষণা করে। দুর্নীতি বিতর্কে ২০০৬-০৭ সালে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন কে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন শেখ হাসিনা।
২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল কয়েকটি ছবি। তাতে মানুষের মাথা কেটে পদ্মা সেতুর পিলারের নিচে রাখা হচ্ছে এমনই গুজব রটে। এর জেরে বাংলাদেশের সর্বত্র আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। তবে দেশটির যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞান সংগঠনগুলি পুলিশ প্রশাসনের সাহায্যে এই গুজব বন্ধ করতে পারেন।
প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রা) খরচ করে তৈরি হওয়া পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে নেপাল, ভারত, ভুটান ও মায়ানমার পর্যন্ত বাণিজ্যিক যাতায়াতের ব্যবস্থা সুগম করবে।