নয়াদিল্লি: ডিজিসিএ-র সতর্কবার্তার পর এয়ার ইন্ডিয়া তাদের সমস্ত বোয়িং ৭৮৭ বিমানে ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের (FCS) লকিং মেকানিজম পরীক্ষা করেছে। বিমান সংস্থার দাবি, সবকিছু স্বাভাবিক এবং কোথাও কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি (no fault in fuel control switches)।
গত মাসে একটি এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ দুর্ঘটনায় পড়ে ২৬০ জনের প্রাণহানির পর, তদন্তকারী সংস্থা AAIB যে প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তা থেকেই তৈরি হয়েছে তীব্র আলোড়ন। সেই রিপোর্টে বলা হয়, পাখা মেলার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের দু’টি ফুয়েল সুইচ ‘রান’ থেকে আচমকা ‘কাট অফ’ পজিশনে চলে যায়, যার ফলে দু’টি ইঞ্জিনই একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়।
নিয়মিত ফুয়েল সুইচ পরীক্ষা
এয়ার ইন্ডিয়ার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম সপ্তাহান্তেই সমস্ত বোয়িং ৭৮৭ বিমানের ফুয়েল সুইচ পরীক্ষা করে। পাইলটদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। কোথাও কোনও ত্রুটি মেলেনি।”
প্রসঙ্গত, এই FCS থ্রটল কন্ট্রোল মডিউল (TCM)-এর অংশ, যা ইতিমধ্যেই বোয়িং-এর নির্দেশ অনুসারে প্রতিটি বিমানে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। তবুও বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে এয়ার ইন্ডিয়া বিষয়টিকে হালকাভাবে নেয়নি।
ককপিটে পাইলটদের কথোপোকথন
ককপিট ভয়েস রেকর্ডার অনুযায়ী, এক পাইলট অপরকে জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি বন্ধ করেছো?” অন্যজন উত্তর দেন, “আমি করিনি।” সেই বিতর্কিত মুহূর্ত থেকেই সন্দেহের তীর গিয়ে পড়ে FCS-এর দিকেই।
এয়ার ইন্ডিয়া পাইলটদের সতর্ক থাকতে বলেছে এবং যেকোনও ব্যতিক্রম টেকনিক্যাল লগে রিপোর্ট করার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে সিঙ্গাপুরে IATA-র একটি অনুষ্ঠানে সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল উইলি ওয়ালশ বলেন, “AAIB-এর রিপোর্ট প্রত্যাশার থেকেও বেশি তথ্যপূর্ণ ছিল। আমি ভারত সরকারের দ্রুত পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। এই ধরনের স্বচ্ছতা গোটা বিমান শিল্পের জন্য জরুরি।”
পাইলট ত্রুটির কোনও প্রমাণ নেই
তিনি আরও বলেন, “যদিও রিপোর্টে কোনও চূড়ান্ত সুপারিশ নেই, তবুও সমস্ত সংস্থার উচিত ফুয়েল সুইচের অবস্থা নিয়মিত পরীক্ষা করা। প্রয়োজনে কেবল অডিও নয়, ককপিট ভিডিও রেকর্ডিংও ভবিষ্যতের তদন্তে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।”
তবে, পাইলট সংগঠনগুলি জোর দিয়ে জানিয়েছে, এই ঘটনায় পাইলট ত্রুটির কোনও প্রমাণ নেই। অতএব অনর্থক জল্পনা না ছড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।