বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিআইএমের হুঙ্কারে (challenge) মিইয়ে গেছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। এমনই কটাক্ষ চলছে রাজনৈতিক মহলে। বিতর্কের কেন্দ্রে সরকারের নেতা মন্ত্রীদের সম্পত্তির অস্বাভাবিক বৃদ্ধির তালিকা। এই তালিকা নিয়েই তৃণমূল বনাম সিপিআইএমের আইনি লড়াই বাধতে চলেছে।
শুধুমাত্র তৃণমূল নয়, গত কয়েক বছরে বাম ও কংগ্রেস নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে এমনই দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রীরা। এরপরেই শাসক দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম৷ তিনি বলেছেন মানহানির মামলা হবে তৈরি থাকুন। তাৎপর্যপূর্ণ, সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রীরা এরপর নীরব, তৃণমূলের তরফেও আসেনি প্রতিক্রিয়া।
সম্পত্তির পরিমান বৃদ্ধি নিয়ে ১৯ জন টিএমসি নেতার তালিকায় রাজ্য জুড়ে শোরগোল। আর তৃ়ণমূলের দাবি, শুধু তাদের নেতাদের নয় ওই তালিকায় আছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের নেতাদের নাম। কেন সেই নামগুলি নিয়ে সংবাদ মাধ্যম নীরব এই অভিযোগ করেছেন তাঁরা। সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিআইএম ও কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রীদের নাম করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
এর পরেই সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চ্যালেঞ্জ করে সেলিমের বার্তা, আমি ব্রাত্য বসুকে চ্যালেঞ্জ করছি। এখন সূর্যকান্ত মিশ্রর, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়দের নাম বলা হচ্ছে। পিটিশন দিক। ব্রাত্য বসু তাঁর আইনজীবীদের বলুন, ১২ সেপ্টেম্বেরর মধ্যে তিনি যে সিপিএম নেতাদের নাম বলেছেন, সাহস থাকলে তাঁদের নামে পিটিশন দিন। আমরা তো দিল্লিতে সেটিং করতে যাব না। আর যদি না করেন, তাহলে মানহানির মামলা হবে৷
সেলিমের দাবি, বাম নেতাদের নামের যে তালিকা পড়েছেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু সেটি পিটিশন দাখিল করার তালিকা। কোনও রায় নয়। তিনি বলেন, রায় আর পিটিশন আলাদা। পার্থক্য আছে। মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মহম্মদ সেলিমের হুঙ্কার, আমি ব্রাত্য বসুকে চ্যালেঞ্জ করছি। এখন সূর্য মিশ্রর, কান্তি গাঙ্গুলিদের নাম বলা হচ্ছে। ১২ তারিখ মামলার শুনানি আছে। চ্যালেঞ্জ নিন। পালটা পিটিশন করুন। ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্রাত্য বসুকে পিটিশন জমা দিতে বলুন। না হলে মানহানির মামলা করা হবে। বিধানসভায় বসে মিথ্যাচার করছেন। রায় আর পিটিশনকে এক করে দেওয়া হয়েছে। আমরা আদালতে যাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আইনজীবী শামীম পিটিশন করেন। আমরা বাকিদের সাপ্লিমেন্টারি লিস্ট দেবো আইনজীবীদের৷
উল্লেখ্য, বছরের পর বছর সম্পত্তি বেড়েই চলেছে নেতা মন্ত্রীদের। সেটা নির্বাচন কমিশনের তথ্য থেকে স্পষ্ট৷ ২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে এবিষয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সুবীর ঘোষ নামের এক ব্যক্তি৷ সোমবার সেই মামলার শুনানিতে ইডিকে পার্টি করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। তাতেই বিরাট অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতারা৷
এই তালিকাভুক্ত যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে ইডি পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা হলেন, শোভন চট্টোপাধ্য়ায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, অর্জুন সিং, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ, ফিরহাদ হাকিম, স্বর্ণকমল সাহা, ব্রাত্য বসু, অরূপ রায়, জাভেদ খান, অমিত মিত্র, আব্দুর রজ্জাক মোল্লা, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সাধন পাণ্ডে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, শিউলি সাহা, সব্যসাচী দত্ত।
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক কটাক্ষ করে বলেন, হঠাৎ করে তৃণমূলের নেতা কাম মন্ত্রীদের বোধদয় হয়েছে৷ বলছেন সহকর্মী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন তার জন্য লজ্জিত৷ খুব বেশী দিন বাকি নেই যখন বলবেন তৃণমূল করি বলে লজ্জিত৷ আসলে এধরনের বহু নেতা, কর্মীরা রয়েছে তা তৃণমূল করে বলে লজ্জিত৷ আসলে ঠাকুরঘরে কে রে? আমি তো কলা খাইনির মতো৷