বিবাহিত মহিলারা পেয়েছেন ‘রুপশ্রী’-র টাকা, কাটমানি নিয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন তৃণমূলের প্রধান

বীরভূমের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের ভদ্রপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান তনুজা খাতুনের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ ও ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তনুজা খাতুন বিবাহিত…

Rupshree money scam

বীরভূমের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের ভদ্রপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান তনুজা খাতুনের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ ও ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তনুজা খাতুন বিবাহিত মহিলাদের (married women) ‘অবিবাহিত’ হিসেবে শংসাপত্র দিয়ে তাঁদের রূপশ্রী (Rupshree) প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতেন। শুধু রূপশ্রী নয়, কিছু মহিলাকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধাও তিনি পাইয়ে দিতেন, যার জন্য ঘুষ নেওয়া হতো।

আয়েশা সিদ্দিকি নামে এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, তাঁর ৩ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদন করার সময় প্রধান তাঁকে ‘অবিবাহিত’ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা (money) পাওয়ার জন্য প্রধান মহিলাদের ভুয়ো বিয়ের কার্ডও ছাপিয়ে দিতেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামবাসী রিপন শেখ বলেন, ‘প্রধান বিবাহিত মহিলাদের অবিবাহিত সার্টিফিকেট দিয়ে ২৫ হাজার টাকা পাইয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে ১০ হাজার টাকা নিজের জন্য রেখে দিচ্ছেন।’

   

এই অভিযোগটি সামনে আসার পর জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। রিপন শেখ আরও দাবি করেছেন, পঞ্চায়েত প্রধান তনুজা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজেপিও এই বিষয়ে সরব হয়েছে। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেছেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, সব জায়গাতেই দুর্নীতি হচ্ছে। এমনকি পঞ্চায়েত স্তরেও এই ধরনের অনিয়ম ঘটছে।’

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান তনুজা খাতুন। তিনি দাবি করেন, ‘যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা নিজেদের তৃণমূল (TMC) কর্মী বললেও আসলে সিপিএমের সদস্য। ব্যক্তিগত শত্রুতার জন্য আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।’ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বরুণ ভট্টাচার্যও এই অভিযোগকে রাজনৈতিক অপপ্রচার হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।

এদিকে, নলহাটি দুই নম্বর ব্লক আধিকারিক রজত রঞ্জন দাস বলেছেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে, তাতে বিবাহিত কেউ কন্যাশ্রী বা রূপশ্রীর টাকা পাননি। তবে টাকার বিনিময়ে অবিবাহিত শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে পঞ্চায়েত প্রধানকে ডেকে পাঠানো হবে।’ এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে এবং অভিযোগের সঠিকতা যাচাই করার জন্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে।