এবার হাই মাদ্রাসার ভুতুড়ে চিকিৎসকের সন্ধান! রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মাদ্রাসায় ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের জটিলতা বেড়েই চলেছে। এই অনিয়মের কালো ছায়া পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-২ ব্লকের মৈতনা অঞ্চলের মান্দারপুর হাই মাদ্রাসায়। সেখানে পাঁচজন ‘ভুতুড়ে’ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে তিন জন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সম্পাদকের পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। তাঁদের কোনও উপস্থিতি বা ক্লাস নেওয়ার রেকর্ড না থাকা সত্ত্বেও, ২০১৫ সাল থেকে বেতন না পাওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। ঘটনার সামনে আসার পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় শোরগোল পড়েছে।
জানাগিয়েছে, রাজ্যজুড়ে পরিচালনা কমিটি কর্তৃক নিযুক্ত এমন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা পাঁচশোর বেশি। পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ এই নিয়োগগুলিকে অনুমোদনহীন ও অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ আদালতের দ্বারস্থ হলেও, রাজ্য সরকার তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতে একটি হলফনামাও জমা দিয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সচিব মুকলেসুর রহমান জানান ” এই শিক্ষকদের নাম বা স্বাক্ষর মাদ্রাসার হাজিরা খাতায় নেই এবং তাঁদের কোনও কাজের রেকর্ডও নেই। তাঁরা ম্যানেজমেন্ট কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন বলে দাবি করলেও, এই ধরনের নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় রাজ্যস্তরের বিজ্ঞপ্তি বা কমিটির কোনও রেজোলিউশন নেই। এর পরই ভুতুড়ে শিক্ষকদের নিয়োগ বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয় “।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগের কারণে মৈতনার মান্দারপুর হাই মাদ্রাসার শিক্ষা পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ ২৯ আগস্ট পরিচালনা কমিটিকে অনুমোদন না দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনায় সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক অনুরুপ মান্নাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিদায়ী পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ওয়াসিম রহমান বলেন ” পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং পর্ষদ নিযুক্ত প্রশাসক এখনও দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। নির্বাচন হলে আমরাই আবার জিতব “। ভুতুড়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ পরিচালন কমিটি নিযুক্ত শিক্ষক-কর্মীরা তাদের আর্জি শীর্ষ আদালতে পেশ করেছেন। তাঁরা ভুয়ো কিনা আদালতই তার ফয়সালা করবে “।
যদিও এ বিষয়ে রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি ‘র কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।