কুরমি আন্দোলনের ধাক্কায় রেল বিভ্রাট৷ শনিবার সকাল পর্যন্ত খড়্গপুর ও আশেপাশের স্টেশনগুলিতে আদিবাসী কুড়মি সমাজের বিক্ষোভে প্রভাব সে ভাবে চোখে পড়েনি৷ কিন্তু বেলা গড়াতেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। কুড়মি আন্দোলনকারীরা রেললাইন ও রাস্তা অবরোধ করায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বহু ট্রেন আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রিত বা বাতিল করতে হয়েছে।
ভোর ৫টা ২ মিনিট থেকে ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত খড়্গপুর ডিভিশনের ভাঞ্জপুর স্টেশনে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ দেখা যায়। একই সঙ্গে চক্রধরপুর ডিভিশনের সিনি-বীরবান এলাকায়ও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। এর প্রভাব পড়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনে।
বাতিল হওয়া ট্রেন
১৩৫০৪ হাতিয়া–বর্ধমান লোকাল
৬৮০১৯/৬৮০২০ টাটানগর–গুয়া–টাটানগর লোকাল
৬৮০০৩/৬৮০০৪ টাটানগর–গুয়া–টাটানগর লোকাল
পথ পরিবর্তন করা ট্রেন Kurmi protest train disruption
১৮০১৩ আদ্রা–বোকারো স্টিল সিটি এক্সপ্রেস: ভোজুডিহ–তালগারিয়া–চাস–বাঁধডিহি হয়ে চলাচল করবে।
নিয়ন্ত্রিত ট্রেন
২০৮৮৭ রাঁচি–বারাণসী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (বোকারো স্টিল সিটিতে নিয়ন্ত্রিত)
২০৮৯৩ টাটানগর–পাটনা বন্দে ভারত
১৮৬২৬ হাতিয়া–পূর্ণিয়া কোর্ট এক্সপ্রেস
১৩৩৫২ আলাপুজা–ধানবাদ এক্সপ্রেস
তফসিলি উপজাতি তালিকাভুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি চালাচ্ছে কুড়মি সমাজ। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ছাড়াও ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার প্রায় ১০০টি স্থানে আন্দোলন চলছে।
হাই কোর্টের রায়
কলকাতা হাইকোর্ট গত বৃহস্পতিবার এই অবরোধকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে সাধারণ মানুষ সমস্যায় না পড়ে। তার পর রাজ্য পুলিশ পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল এবং বিভিন্ন স্টেশনে বাড়তি আরপিএফ মোতায়েন করা হয়েছিল।
সকাল পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি স্টেশনের আশেপাশে আন্দোলনকারীদের দেখা যায়নি। জেলার অন্যান্য স্টেশনেও পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ছিল। সড়ক চলাচলেও বড় ধরনের ব্যাঘাত হয়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিনাকী দত্ত জানিয়েছেন, শালবনি, চন্দ্রকোনা রোডসহ জেলার অন্যান্য অংশে পরিবহন স্বাভাবিক ছিল।
রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের এক জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডের রাখামাইন ও গালুডির এলসি গেটে অবরোধ ছিল। হাওড়া থেকে রাঁচি যাওয়ার পথে চাকুলিয়া স্টেশনে নিয়ন্ত্রিত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল করছিল। ঘাটশিলা ও ঝাড়গ্রাম স্টেশনে কিছু ট্রেন সাময়িকভাবে থামানো হয়। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ঝাড়গ্রাম রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার ডি কুমারও জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ন’টা পর্যন্ত প্রায় সব ট্রেন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করেছে। পরে সামান্য সমস্যার সৃষ্টি হলেও তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এসেছে।