কলকাতায় বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বন্ধের পক্ষে সহমত নন ফিরহাদ

কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সম্প্রতি বাংলাদেশি (bangladeshi) রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে। তবে কলকাতা…

KMC Mayor Firhad Hakim Refuses to Increase Councillors' Allowance

short-samachar

কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সম্প্রতি বাংলাদেশি (bangladeshi) রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে। তবে কলকাতা (Kolkata) পুরসভার মেয়র (mayor) ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তিনি একে মানবিকতার পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন এবং এ বিষয়ে তাঁর দৃঢ় মতামত ব্যক্ত করেছেন। মেয়র বলেন, “বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে আমাদের প্রবল আপত্তি রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের কোনও মানুষ অসুস্থ হলে আমরা তাঁকে সুস্থ করব না? চিকিৎসক (Treatment) বা চিকিৎসা কেন্দ্রের ধর্ম রোগীকে সুস্থ করা।”

   

মেয়র (mayor) হাকিম আরও বলেছেন, “চিকিৎসা কখনোই জাতি, ধর্ম বা দেশের সীমায় আবদ্ধ নয়। রোগীকে সুস্থ করা চিকিৎসকদের পবিত্র দায়িত্ব। তা দেশীয় সম্পর্ক বা রাজনৈতিক পরিস্থিতির ঊর্ধ্বে।” তাঁর মতে, ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হিসেবে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করা মানবিক ভুল হবে এবং তা সমর্থনযোগ্য নয়। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, “চিকিৎসা দিতে না পারাটা আমাদের মানবিকতার বিরুদ্ধে যাবে, এটা ঠিক নয়।”

এদিকে, কলকাতার এক জনপ্রিয় প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ইন্দ্রনীল সাহা সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্ট করেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি লেখেন, “বিইউইটি-র প্রবেশপথে ভারতীয় জাতীয় পতাকা বিছিয়ে রাখা হয়েছে, যা তিনি নিন্দা করেছেন।” এর পরই তিনি জানান, “চেম্বারে বাংলাদেশি রোগী দেখা আপাতত বন্ধ রাখছি। আগে দেশ, পরে রোজগার। আশা রাখব, দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অন্যরাও এটা অনুসরণ করবেন।” এই পোস্টের পরই উত্তর কলকাতার মানিকতলার জেএন রায় হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)এই পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, “কোনও হাসপাতাল ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের চিকিৎসা বন্ধ করতে পারে না। যদি কেন্দ্র সরকার ভিসা দেয়, তাহলে চিকিৎসা করানোর কোন বাধা নেই। আমি এমন কোনও সমস্যা জানি না।” তিনি আরও বলেছেন, “আমাদের দেশের সম্পর্ক যাই হোক না কেন, চিকিৎসা মানবিক বিষয় এবং সেই ক্ষেত্রে আমাদের কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়।”

এছাড়া, মেয়র হাকিম জানান, বাংলাদেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি চিকিৎসা প্রদান বন্ধ করা হয়, তবে তা মানবাধিকারের পরিপন্থী হবে। তিনি বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত রোগীর শারীরিক অবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া, তার রাজনৈতিক বা জাতীয় পরিচয় নয়।”

এ সময়, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান অত্যাচারের ঘটনাগুলো নিয়ে কলকাতায় ব্যাপক ক্ষোভ এবং প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিবাদী পোস্ট করেছেন। তবে কলকাতার মেয়রের অবস্থান খুবই স্পষ্ট—চিকিৎসক হিসেবে রোগীকে সুস্থ করা, জাতি বা দেশের সীমা ছাড়িয়ে একান্ত মানবিক দায়িত্ব।

যদিও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিতভাবেই কলকাতার জনগণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা ছড়াচ্ছে।