অনেক জিনিস মানেই অন্দরমহল সুন্দর, এমনটা মােটেও নয়। তারথেকে কম জিনিস রাখুন কিন্তু বাছাই করে। আসলে পরিমিতবােধ, মার্জিত রুচি আর সৃজনশীলতাই বাড়ির সাজসজ্জাকে করে তােলে অনবদ্য। বাড়ির সৌন্দর্যের ব্যলান্স বজিয়ে রাখতে টিপস দিলেন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার মিঠুন তরফদার।
১. ড্রয়িংরুমের জানালায় ডবল রড লাগিয়ে ডুয়েট পর্দা টানান। বাইরের দিকে হেভি ওয়ার্কের সিল্কের পর্দা দিন, তারওপরে ডিজাইন করা ভয়েলের ট্রান্সপারেন্ট পর্দা লাগান। এই পর্দাটি মাঝখানে আলগােছে বেঁধে রাখুন। বেডরুমে ডুয়েট পর্দা লাগালে উল্টোটা করুন। এছাড়া ডুয়েল ব্লাইন্ডস (দু’রকমের কাপড় জেব্রা ক্রস দিয়ে তৈরি) ব্যবহার করতে পারেন।
দাম: ডুয়েট পদ স্টার্ট, ২৫০ টাকা মিটার, ডুয়েল ব্লাইন্ডস স্টার্ট ৪৫০ টাকা স্কোয়ারফিট
কোথায় পাবেন: চাদনি মার্কেট, ডি-ডেকর, বেহালা চৌরাস্তা।
২. ঘরে বনেদিয়ানা চাইলে ছােটো ঝাড়লণ্ঠন লাগান। মডার্ন ফিল চাইলে হ্যাঙ্গিং, স্ট্রিপ, কোভ, ডাউন লাইট লাগান। ঘরের পরিবেশ মায়াবী করতে রুমের কর্ণারে পলিকানের মূর্তি ব্যবহার করুন। দেখতে শাে পিসের মতাে, আসলে এটি টি লাইট হােল্ডার। ধাতুর তৈরি ব্রঞ্জের ফিনিশিং। যার ভেতরে মােমবাতি জ্বালিয়ে দিলেই আলাে আবছায়া খেলায় ভােল বদলে যাবে ঘরের।
দাম: ঝাড়লণ্ঠন স্টাট ২০০০ টাকা, হ্যাঙ্গিং, স্ট্রিপ, কোভ, ডাউন লাইট স্টাট ১২০০ টাকা, পলিকানের মূর্তি স্টাট ৫০০ টাকা।
কোথায় পাবেন: এজরা স্ট্রিট
৩. ড্রয়িংরুম ছােটো হলে সােফার সঙ্গে রাখুন পুফ। পেছনের ওয়ালে লাগান সুন্দর ঘড়ি অথবা ভিন্টেজ বা কাস্টোমাইজ ওয়ালপেপার। মাঝখানে কফি টেবিল, তারওপর গােল চিনামাটির টবে আর্টিফিশিয়াল ফ্লাওয়ার। দরজার বিপরীত দেওয়ালে রাখুন আনইভেন ডিজাইন বুকসেলফ। এই ওয়ালের নীচ থেকে পাশের ওয়ালের ওপর পর্যন্ত সিঁড়ির ধাপের মতাে সেলফ লাগান। প্রতিটি র্যাকে ছােটো ছােটো ফুলের গাছ। সাজান। এর ঠিক নীচে মেঝের ওপর কিছুটা অংশ জুড়ে পেবেলস্ ফ্লোর বানাতে পারেন।
দাম:পুফ স্টাট ১৫০০ টাকা, বুকসেলফ রেডিমেড স্টাট ৫৫০০ টাকা, পেবেলস্ স্টাট ৫০ টাকা।
কোথায় পাবেন: পেবেলস যেকোন মার্বেল বা টাইলসের দোকানে।
৪. স্পেস সেভিং, রয়্যাল প্লাস আধুনিক লুক চাইলে বেস্ট অপশন গােল ডাইনিং টেবল। এবং তার ওপর ব্রাশ ফিনিশিং ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড। ডাইনিং রুমের চওড়া দেওয়ালে লাগান সুন্দর কাজ করা বড়াে আয়না। ছােটো ওয়ালে টাঙান ছবি। টেবিলের ওপরে সিলিংয়ে ঝােলান পেনডেন্ট লাইট।
দাম: ব্রাশ ফিনিশিং ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড স্টার্ট ৫০০ টাকা, পেনডেন্ট লাইট স্টাট ১৫০০ টাকা
কোথায় পাবেন: পেনডেন্ট লাইট এজরা স্ট্রিট, ব্রাশ ফিনিশিং ক্যান্ডেল: এলপ্লানেড।
৫. কিডস রুমের বেস কার্লার হােক হােয়াইট, আর তার সঙ্গে নানান রঙের মিলান্তি। জেনারেলি কিডস রুম ছােটো হয়, সেক্ষেত্রে ওয়াল হ্যাংগিং বেড পারফেক্ট। নীচের স্পেসটিতে সােফা ও র্যাক রাখতে পারেন। খাটে ওঠার জন্য সিঁড়িগুলিতে চেস্ট বক্স বানান। একসঙ্গে দু’রকম পার্পাসে কাজে লাগবে। কিডস রুমের একটি দেওয়ালে কার্টুন ওয়ালপেপার লাগান। আর সিলিংয়ে করান ম্যুরাল।
দাম: ওয়ালপেপার ওয়ান রােল স্টাট ২৫০০ টাকা
৬. বেডরুমের একটি ওয়ালে রাখতে পারেন ফটো কোলাজ। বেড প্লেস করুন দরজার অপােজিট ওয়ালে, সঙ্গে মাথায় রাখুন আপনার খাটের তিনদিকে যেন পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। রুম ব্যালেন্স করার জন্য ছােটো ছােটো ফার্নিচার রাখুন। যেমন খাটের পাশে ছােট চেস্ট অফ ড্রয়ার। ওয়াল ক্লসেটের সঙ্গে ওয়াল র্যাক, তাতে নানান রকমের শাে পিস দিয়ে সাজান।
দাম: চেস্ট অফ ড্রয়ার রেডিমেড স্টার্ট ৫০০০ টাকা
৭. ফলস সিলিং, মুরাল, থিমের ব্যবহারের সঙ্গে রঙের ছোঁয়া এসব তাে আছেই তবে এর সঙ্গে সিলিংয়ে একখানা সুন্দর ফ্যান আপনার ছাদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ।
দাম: ফ্যান স্টার্ট ৫০০০ টাকা
কোথায় পাবেন: এজরা স্ট্রিট
৮. লেদার আসবাব মানে আমার বুঝি, সােফা-ডাইনিং টেবল বা চেয়ার। কিন্তু এখন অন্যভাবে লেদারের ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন ওয়াল প্যানেল, বিগ ব্যাগ কিংবা সােফা। ওয়ার্ডবের পাল্লা, বেডের হেড-এ লেদারের ডিজাইন। সােফায় লেদারের কুশন। তবে খরচ বাঁচাতে বিকল্প হিসাবে লেদার ফিনিশিং এফেক্ট দিয়ে আসবাব বানাতে পারেন।
৯. নিজের নামের বদলে নেমপ্লেটে বাড়ির নাম বা কোনও ওয়েলকাম নােটস লিখুন। নেমপ্লেটের পাশে ফ্লাওয়ার হ্যাংগিং লাগান।
দাম: নেমপ্লেটে স্টার্ট ১০০০ টাকা
কোথায় পাবেন: পার্কস্ট্রিট, এসপ্ল্যান্ড, যাদবপুর
১০. খােলা ব্যালকনি হলে ছােটো একটা সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট করে ফেলতে পারেন ছােটো ছােটো টেবল, চেয়ার দিয়ে। তবে ছােট ব্যালকনি হলে মােড়া রাখুন। সাজান বাহারি ফুলের টব ও আর্টিফিশিয়াল ঘাস দিয়ে। সেই সঙ্গে বেঁধে দিন খান দু’য়েক উইন্ডচেন।
দাম: আর্টিফিশিয়াল ঘাস স্টার্ট পার স্কোয়ার ফিট ২০০ টাকা
১১. বেডরুমে উডেন পার্টিশন করে নিতে পারেন। বেডসাইট ওয়ালে | টিভি রাখুন। অপজিট সাইট স্ট্যাডির জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
১২. পােস্টার ফ্রেম, ফটো বুথ ফ্রেম, কোলাজ ফ্রেম, পােট্রেট ফ্রেম—অ্যাজ ম্যাটেরিয়াল ফ্রেমেরও নানান টাইপ রয়েছে। তবে দেওয়ালে ফটোফ্রেম লাগানাের সময় খেয়াল রাখুন সব ফ্রেমের আকার ও আয়তন যেন এক না হয়। আর সূর্যের। আলাে যে ওয়ালে এসে পড়ে সেই দেওয়ালে ছবি না রাখার চেষ্টা করুন, এতে সূর্যের আলাে প্রতিফলিত হয়ে ছবি স্পষ্ট দেখা যাবে না। এছাড়া ইউনিকনেস আনতে, ছবির বদলে ছােটো নােট ফ্রেমে বাঁধিয়ে হলঘরে টাঙাতে পারেন। রুম ছােট হলে দেওয়ালের রঙ হালকা করুন। হালকা শেডের রঙ স্পেস। ইলিউশন তৈরি করে করে ফলে ঘরকে বড় দেখায়। এছাড়া অ্যান্টিক ফার্নিচার হলেও দেওয়ালের রঙ হালকা রাখুন।
<
p style=”text-align: justify;”>যােগাযােগ:৮১০০৯৮৪৪০৫