ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডারে পতন, রিজার্ভ কমে ৬৮৯.৭৩৩ বিলিয়ন ডলারে

India Forex Reserves Hit New Record High

৩১ অক্টোবর শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫.৬২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮৯.৭৩৩ বিলিয়ন ডলারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র সর্বশেষ ‘উইকলি স্ট্যাটিস্টিকাল সাপ্লিমেন্ট’ অনুসারে, এই পতনের মূল কারণ বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ (Foreign Currency Assets) ও সোনার রিজার্ভে বড় ধস।

Advertisements

রিজার্ভ এখনও রেকর্ড স্তরের কাছাকাছি:
যদিও গত এক মাস ধরে রিজার্ভে ওঠানামা লক্ষ্য করা গেছে, তা সত্ত্বেও ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডার এখনও সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তরের কাছাকাছি রয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ দেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৭০৪.৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল।

   

বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ ও সোনার মজুদের পতন:
প্রতিবেদিত সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ (FCA), যা মোট রিজার্ভের সবচেয়ে বড় অংশ, ১.৯৫৭ বিলিয়ন ডলার কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬৪.৫৯১ বিলিয়ন ডলারে। একই সময়ে, সোনার রিজার্ভ ৩.৮১ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১০১.৭২৬ বিলিয়ন ডলারে। আন্তর্জাতিক বাজারে সাম্প্রতিক সময়ে সোনার দামের তীব্র বৃদ্ধি—বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা বৃদ্ধির ফলেই—এই পরিবর্তনের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

RBI-র মন্তব্য, আমদানি খরচ মেটাতে যথেষ্ট রিজার্ভ:
নীতি পর্যালোচনা বৈঠকের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্রা জানান, ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ এতটাই শক্তিশালী যে তা ১১ মাসের পণ্য আমদানির ব্যয় নির্বিঘ্নে মেটাতে সক্ষম। তিনি বলেন, “ভারতের বহিঃখাত স্থিতিশীল রয়েছে, এবং RBI দেশের বহিঃদায়বদ্ধতা পূরণে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”

Advertisements

রিজার্ভ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা:
২০২৩ সালে ভারত প্রায় ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক রিজার্ভে যোগ করেছিল, যেখানে ২০২২ সালে দেখা গিয়েছিল ৭১ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি। ২০২৪ সালে রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার, আর ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।

রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় RBI-র কৌশল:
বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ মূলত মার্কিন ডলার, ইউরো, ইয়েন এবং পাউন্ড স্টার্লিংয়ের মতো মুদ্রায় রাখা হয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রায়ই বাজারে হস্তক্ষেপ করে রুপি স্থিতিশীল রাখতে—রুপি শক্তিশালী হলে ডলার কেনে এবং দুর্বল হলে ডলার বিক্রি করে। এই কৌশলের মাধ্যমেই RBI রিজার্ভ ভারসাম্য ও মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।