কলকাতা (Kolkata) পুরসভা (Municipal Corporation) বেআইনি নির্মাণ (Illegal construction) প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিলেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে কার্যক্রমের গতি অনেকটাই মন্থর। ২৮ জুন থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত, কলকাতার ১৬টি বরো এলাকায় বেআইনি নির্মাণের ৫২৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে, কিন্তু মাত্র ২৬৪টি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। এই পরিসংখ্যান স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে যে অভিযোগ জমা পড়লেও সেগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
কিছু এলাকায় বেআইনি নির্মাণের (Illegal construction) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও সাধারণত স্থানীয় মানুষের প্রতিবাদ ও বাধার কারণে তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের গরফার ঘোষপাড়ায় একটি চারতলা বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে পুরকর্মীরা মহিলাদের প্রতিবাদ এবং হেনস্থার সম্মুখীন হন। স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় পুরকর্মীদের কাজে বাধা দিয়েছিলেন এবং, একাধিক চেষ্টা করেও পুরকর্মীরা বাড়িটি ভাঙতে পারেননি। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা পরবর্তী সময়েও বাড়িটি ভাঙার চেষ্টা করবেন।
এছাড়া, ১৫ নম্বর, ৩ নম্বর, ৭ নম্বর ও ১২ নম্বর বরোতেও বেআইনি নির্মাণের (Illegal construction) বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু সেসব অভিযোগের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়ি ভাঙা হয়নি। ১৫ নম্বর বরোতে ১২৭টি অভিযোগ জমা পড়লেও, ভাঙা হয়েছে মাত্র ২৭টি। ৩ নম্বর বরোতে ৮০টি নোটিস দেওয়া হলেও, ভাঙা হয়েছে মাত্র ৩২টি। ৭ নম্বর বরোতে ৮৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে, কিন্তু ভাঙা হয়েছে মাত্র ৪১টি। এসব দেখেও মনে হচ্ছে যে, পুরসভা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
গার্ডেনরিচের ১৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় পুরসভার কর্তৃপক্ষ বেআইনি নির্মাণ (Illegal construction) প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে, এসব পদক্ষেপ কার্যকর হবে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। বেশ কিছু এলাকায় বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় পুরকর্মীদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে, এমনকি বন্দুক দিয়ে ভয় দেখানো পর্যন্ত ঘটেছে। একাধিক অভিযানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় পুরকর্মীরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হচ্ছেন না।
এছাড়া, একাধিক জায়গায় এমন ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে পুরকর্মীরা বেআইনি নির্মাণ (Illegal construction) ভাঙতে গিয়ে আটকে পড়েছেন। মাস তিনেক আগে, বেহালার একটি আবাসনে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলে স্থানীয় মহিলারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, যার ফলে কাজ স্থগিত করতে হয়েছিল।
বেআইনি নির্মাণের (Illegal construction) বিরুদ্ধে পুরসভার নেওয়া পদক্ষেপগুলির গতি বৃদ্ধি করা জরুরি। শুধুমাত্র নোটিস জারি করলেই সমস্যা সমাধান হবে না, পুরসভার উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যদি এমন চলতে থাকে, তাহলে কলকাতার অবৈধ নির্মাণ কার্যক্রম আরো বাড়বে এবং জনস্বার্থের ক্ষতি হবে।