মহাকুম্ভ মেলার উদ্দেশে যাত্রা করতে না পেরে ট্রেনের এসি কামরায় ব্যাপক ভাঙচুর চালালেন ভক্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের মধুবনী স্টেশনে। ইন্ডিয়া টুডের রিপোর্ট অনযায়ী, ভক্তরা মহাকুম্ভ মেলায় যাওয়ার জন্য স্বতন্ত্র সেনানি এক্সপ্রেসে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। শয়ে শয়ে ভক্তদের ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে ওঠার সুযোগ না পেয়ে, তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং এসি কামরার কাচ ভাঙতে শুরু করে।
স্টেশনের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ট্রেনের কামরাগুলি ভক্তে ভরা থাকায় দরজা খুলতে বাধা দেওয়া হচ্ছিল, তখন বিপুল সংখ্যক যাত্রী একত্রিত হয়ে ট্রেনের ওপরে আক্রমণ শুরু করেন। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে রেলওয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও সক্ষম হননি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে, পাথর ছোড়ার ফলে ট্রেনের জানালার কাচ ভেঙে যায় এবং সেটি ট্রেনের ভেতরে থাকা যাত্রীদের ওপর পড়তে থাকে। এই ঘটনায় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়, এবং পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধুবনী স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়ার পরও বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটেনি। মধুবনী ও দ্বারভাঙ্গার মাঝামাঝি এলাকায় ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। বিশেষত ১২৫৬১ নম্বর ট্রেনের এম১, বি৫ এবং এ১ কামরাগুলির জানালা ভাঙচুর করা হয়। এই কামরাগুলির জানালা ভাঙার পর যাত্রীরা সমস্তিপুর স্টেশনে জানালা দিয়ে এসি কামরায় প্রবেশ করার জন্য চেষ্টা করতে থাকে। তবে, এই ধরনের ঘটনা শুধু বিহারেই নয়, মধ্যপ্রদেশেও ঘটে।
মধ্যপ্রদেশের ঝাঁসি থেকে প্রয়াগরাজগামী একটি বিশেষ ট্রেনের ওপর হরপালপুর স্টেশনে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এই হামলার ফলে ট্রেনের জানালার কাচ ভাঙে যায় এবং যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতির ফলে ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পায়, এবং মহাকুম্ভ যাত্রার সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এদিকে, মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে লাখ লাখ পূণ্যার্থী, সাধু, সন্ন্যাসী এবং সাধারণ মানুষ যাত্রা করেছেন। এর ফলস্বরূপ, প্রয়াগরাজ যাওয়ার পথে অস্বাভাবিক যানজট দেখা দেয়। রবিবারের মধ্যে বিভিন্ন জেলায় যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। জানা গিয়েছে, যানজট এড়াতে মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রয়াগরাজ অভিমুখে যাওয়া শত শত যানবাহন থামানো হয়।
মধ্যপ্রদেশের কাটনি জেলায় দীর্ঘ যানজটের কারণে সোমবার পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। এক পর্যায়ে, রেওয়ার চকঘাটে মধ্যপ্রদেশ-উত্তর প্রদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই যানজটের কারণে বহু যানবাহন ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আটকে ছিল। এমনকি, ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে অনেক যাত্রীর ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লেগেছে।