গত ২১ শে জানুয়ারি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই কয়েক জন সদস্যের প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে ঢাকায়। যা এইমুহুর্তে ভারতের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে চলেছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিষেশজ্ঞরা। যদিও এই সফরের পরই ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে তারা বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজর রাখছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোনো পরিস্থিতিতে “যথাযথ ব্যবস্থা” নেবে।
ভারতের জাতীয় স্তরে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তান এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামরিক প্রস্তুতি এবং সক্ষমতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে চাইছে। বাংলাদেশের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানায়। যা প্রথমবারের মতো দুই দশক পর আইএসআইয়ের বাংলাদেশ সফর।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধির জয়সওয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন,”আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির কর্মকাণ্ডের প্রতি বিশেষ নজর রাখছি, বিশেষ করে সেইসব কর্মকাণ্ড যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে, যদি প্রয়োজন হয়।”
এই সফরের সময়, বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য গুরুত্বরপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ বহিরাগত প্রভাবের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত রাখতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্যদিকে আইএসআইকে বাংলাদেশের মাটিতে গোপনে কার্যক্রম চালানোর জন্য বহু বছর ধরেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের কারণে এবং উগ্রপন্থী শক্তিকে সহায়তা জন্য শেখ হাসিনার আমলে আইএসআইয়ের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা হয়েছিল বাংলাদেশে।
১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সময় আইএসআইয়ের সহযোগিতায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে অনেককে আটক করা হয়েছিল তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তবে শেখ হাসিনার পরে মহম্মদ ইউনুসের অধীনে পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চলছে।
নব্বইয়ের দশকে যখন পাকিস্তানে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবিরগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তখন আইএসআই বাংলাদেশকে ব্যবহার করে ভারতীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং বিদ্রোহী তৎপরতার জন্য অর্থায়ন করেছিল। এই কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকার কঠোর ব্যবস্থাও নিয়েছিল।
তবে বর্তমানে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে(Pakistan-Bangladesh) সামরিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলছে। যা ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্কের বৃদ্ধি এবং আইএসআইয়ের গোপন কার্যক্রম নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে ভারতের কাছে। যা ভারতকে আরও সতর্ক এবং প্রস্তুত থাকতে বাধ্য করছে।